রোগী সেজে ভারতে গিয়ে প্লেনে ফিরছে ‘ট্যাপেন্টাডল’ মাদক নিয়ে

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ট্যাপেন্টাডল নামের মাদকসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঢাকা মেট্রো উত্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চক্রের একজন সদস্যকে রোগী সাজিয়ে স্থলসীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঠানো হতো। এরপর সেখান থেকে প্লেনে করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক নিয়ে দেশে ফিরে আসে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল থেকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কলকাতা থেকে আসা ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটের পাঁচ যাত্রীকে তল্লাশি করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪২ হাজার ২০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট জব্দ করা হয়, যা এযাবৎকালে মাদকের সবচেয়ে বড় চালান।’

পরে ওই পাঁচ যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো—মো. সোলাইমান, হৃদয় ইসলাম রাজু, একেএম আবু সাঈদ, আশিক সাইফ ও মো. ফারুক।

সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, ট্যাপেন্টাডল মূলত ট্যাবলেট জাতীয় মাদক। ভারত থেকে বাংলাদেশে  এই মাদক পাচারের  মূলহোতা মো. সোলাইমান। তাকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেছে, মাসে চার-পাঁচবার কলকাতায় যেতো সে। প্রতিবারই বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্যাপেন্টাডল-সহ অন্যান্য অবৈধ মাদক দেশে নিয়ে আসতো। এ কাজে তার একাধিক সহযোগী ছিল। কৌশল হিসেবে তারা কলকাতা যেতো যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। দেশে ঢোকার ক্ষেত্রে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে রুট হিসেবে ব্যবহার করতো। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, তল্লাশি করে সুলাইমানের ট্রলি ব্যাগের ভেতর থেকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় ৩০ হাজার পিস, হৃদয় ইসলাম রাজুর কাঁধে থাকা স্কুল ব্যাগের ভেতর থেকে চার হাজার পিস, আবু সাঈদের হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে তিন হাজার, সাইফের হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে তিন হাজার পিস, ফারুকের শপিং ব্যাগ থেকে ২ হাজার ২০০ পিস মাদক জাতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট  উদ্ধার করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্যাপেন্টাডল এক ধরনের ব্যথা বা চেতনানাশক ট্যাবলেট। মাদকাসক্তরা ইয়াবার বিকল্প হিসেবে এই ট্যাবলেট সেবন করছে। বাংলাদেশে এটির উৎপাদন নিষিদ্ধ। তবে ভারতে এখনও ট্যাপেন্টাডল বৈধ হওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে এটি দেশে আনছে।