হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় করা মামলায় দুই রাজস্ব কর্মকর্তাসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান।
তিন জন হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম সাহেদ ও সিপাহি মো. আফজাল হোসেন।
শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আট আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম সাহেদ ও সিপাহী মো. আফজাল হোসেনকে আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অন্যদিকে বাকি পাঁচ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার তিন জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং পাঁচ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তারও আগে ১৩ সেপ্টেম্বর তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম সাহেদ, আকরাম শেখ, মো. মাসুম রানা এবং সিপাহি মো. মোজাম্মেল হক, মো. নিয়ামত হাওলাদার, মো. রেজাউল করিম ও মো. আফজাল হোসেন।
এর আগে গত ২২ আগস্ট একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, ঢাকা কাস্টম হাউসের বিমানবন্দর ট্রানজিট গুদামে ৫৫ কেজি সোনা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ ছয়টি ডিটেনশন মেমোর পণ্যের হিসাবে গরমিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সোনা চুরির এ ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে গত ২ সেপ্টেম্বর। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি সোনা চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মামলা হয় অজ্ঞাতদের আসামি করে। এসব সোনার দাম প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এ ঘটনায় শুল্ক বিভাগ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
সোনা চুরির ঘটনায় কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিমানবন্দর থানায় এ মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম সোনা খোয়া গেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনার বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এই গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
৫৫ কেজি সোনা চুরি: তিন জন ফের রিমান্ডে
কয়েক মাস আগেই সরানো হয় স্বর্ণ, পরে চুরির নাটক
৫৫ কেজি স্বর্ণ উধাও: ৮ জনকে সন্দেহ পুলিশের
শাহজালালে ৫৫ কেজি সোনা চুরি, প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য
৫৫ কেজি সোনা উধাও: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চুরির মামলা
লকার থেকে ৫৫ কেজি সোনা গায়েব, ফাঁসছেন ৪ কাস্টমস কর্তা
বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে ১৫ কেজি সোনা উধাও!