‘‌ওখানেই কর্মীদের সঙ্গে দেখা করব’‌, মুরলীধর সেন লেনের ভাঙা পার্টি অফিসেই যাবেন দিলীপ

ভাঙা ঘরেই আলো দেখাতে চান তিনি। মাথার উপর ছাদ থাকুক বা না থাকুক তিনি সেখানেই সংগ্রামী বার্তা দেবেন কর্মীদের। শুধু তাই নয়, তিনি মনে করেন বিপ্লব কখনও ঘরে বসে হয় না। সেটা করতে খোলা আকাশই যথেষ্ট। যদিও তাঁর আমলে লোকসভা নির্বাচনে এবং বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্য এসেছিল। যে পার্টি অফিসে বসে সেটা সম্ভব হয়েছিল, আজ তা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেই পরিচিত ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসটি বিজেপির। আর সেখানেই তাঁর ঘর ছিল। রাজ্য সভাপতি থাকার সময় এবং এখন শুধু সাংসদ হলেও তিনি রাজ্য–রাজনীতিতে চর্চিত চরিত্র। হ্যাঁ, তিনি বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

এখন দিলীপ ঘোষের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরটি ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাতে বিপ্লব থেমে থাকতে পারে না। তাই সাধারণ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে দিলীপ ঘোষ ওই পার্টি অফিসে শীঘ্রই পা রাখবেন বলে জানালেন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ। তাঁর রাজ্য সভাপতির পদ আগেই খোয়া গিয়েছিল। তারপর চলে যায় সর্বভারতীয় সহ–সভাপতির পদ। এখন তিনি স্রেফ সাংসদ। তিনি নয়াদিল্লি থেকে এক সংবাদমাধ্যমকে গোটা বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘‌আমার ঘরের এসি মেশিন খুলে নেওয়া হয়েছে। ঘরটা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কলকাতা ফিরে নিশ্চয়ই মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসে যাব। আর দলের সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে দেখা করব। ঘর থাকুক বা না থাকুক।’‌

এদিকে এই পার্টি অফিস নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে। খোদ অটলবিহারী বাজপেয়ীর পায়ের ধূলো পড়েছিল ৬, মুরলীধর সেন লেনের রাজ্য বিজেপির পার্টি অফিসে। সেসব এখন অতীত। দিলীপ ঘোষের জন্য একটি ঘর এখানে বরাদ্দ ছিল। তিনি রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর থেকেই। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় দিলীপ ঘোষকে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি করা হয়। তখন আর একটি ঘর বরাদ্দ করা হয় মেদিনীপুরের সাংসদের জন্য। পরে পদ না থাকলেও ঘর ছিল। পার্টি অফিসে গেলে ওই ঘরেই বসতেন তিনি। বৈঠকও করতেন তিনি সেখানে। আজ সেটাও ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:‌ তালাবন্ধের পরও থামছে না কোন্দল, সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে উঠল মুর্দাবাদ স্লোগান

কেন এমন ঘটনা ঘটছে?‌ বিজেপি এখন নতুন পার্টি অফিস করেছে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে। তাই এই পুরনো কার্যালয় রাখতে চান না নেতারা। এটা ভেঙে সংস্কার করে দলের কর্মীদের কাজে লাগানো হবে। দলের কল সেন্টার হবে। এই কল সেন্টার হবে দিলীপ ঘোষের ঘরেই। তাই ওই ঘরে টিভির কেবল সংযোগ কেটে দেওয়া থেকে শুরু করে এসি মেশিন খুলে ফেলা হয়েছে। অন্যান্যদের ঘরেরও একই অবস্থা। তাই তাঁর জন্য নির্দিষ্ট কোনও ঘর না থাকলেও পার্টি অফিসের উঠোনেই চেয়ার পেতে বসবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেদিনীপুরের সাংসদ। এই বিষযে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌সল্টলেকে আমাদের একটি পার্টি অফিস আছে। কিন্তু জেলার বিজেপি কর্মীদের মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসে আসতেই সুবিধা হয়। তাই আমি কলকাতায় থাকলে ওখানেই কর্মীদের সঙ্গে দেখা করব।’‌