ভর্তির সময়সীমা বাড়িয়েও লাভ হল না, এখনও রাজ্যের স্নাতকস্তরে ৪১ শতাংশ আসন ফাঁকা

বারবার সময় বাড়ানো হয়েছে। তারপরেও শুধুই শূন্যতা। মানে আসন ফাঁকা। স্নাতকে ভর্তির সময়সীমা বারবার বাড়িয়েও ছাত্রছাত্রীদের কলেজমুখী করা গেল না। এমনকী লাভও হল না। এই ঘটনা নিয়ে জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। কারণ রাজ্যের অধিকাংশ কলেজে এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে বিস্তর আসন। প্রথম দু’দফায় কিছু আসন পূরণ হলেও ফাঁকা অংশটাই ছিল বেশি। তাই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল। ভর্তির সময়সীমা আবার বাড়িয়ে ২০ সেপ্টেম্বর করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও ঠিক কী হল?‌ এখন শিক্ষা দফতরের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, এখনও প্রায় ৪১ শতাংশ আসন খালি পড়ে রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে এমন দেখা যায়নি। সবচেয়ে বেশি আসন ফাঁকা রইল এবারই।

কেন এখনও আসন ফাঁকা?‌ ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে যথাক্রমে ৩৪, ৩৩ এবং ৩৭ শতাংশ আসন খালি পড়েছিল। ভর্তি প্রক্রিয়ার পর এটাই দেখা গিয়েছিল। কিন্তু কেন এত সংখ্যক আসন পূরণ হল না?‌ এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে উচ্চশিক্ষা দফতর পর্যালোচনা করে দেখেছে, বেশিরভাগ কলেজে সংরক্ষিত আসনগুলিই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এটা নিয়েই এখন ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। কারণ দেখা যাচ্ছে বহু জায়গায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আবেদনই জমা পড়েনি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভর্তির প্রক্রিয়া অনেকটা দেরিতে শুরু হয়েছিল।

তাহলে কি আবার সময়সীমা বৃদ্ধি পাবে?‌ পড়ুয়া ভর্তির এমন চিন্তা বেশ চাপে ফেলেছে উচ্চশিক্ষা দফতরকে। বারবার সময়সীমা বাড়ানো হলেও পূরণ হয়নি ফাঁকা আসন। তাই দুর্গাপুজোর পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। কলেজগুলির আবেদনের ভিত্তিতে বারবার সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বরং ফাঁকা আসন থেকেই গিয়েছে। রাজ্যের ৪৪১টি কলেজে মোট আসন কমবেশি ৯ লক্ষ। এবার স্নাতকস্তরে ভর্তি হয়েছেন ৫ লক্ষ ২০ হাজারের থেকে সামান্য বেশি পড়ুয়া। সুতরাং আসন সংখ্যা কতটা ফাঁকা সেটা সরাসরি বোঝা যাচ্ছে। কলকাতায় সব থেকে বেশি আসন খালি। জেলার চিত্র তাও মন্দের ভাল। সিটি কলেজ, গুরুদাস কলেজ, নিউ আলিপুর কলেজ–সহ একাধিক কলেজ রয়েছে সেই তালিকায়।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌দু’‌মাসের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেব’‌, যন্তরমন্তর থেকে কথা দিলেন অভিষেক

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‌এই আসন ফাঁকা পড়ে থাকত না। ফাঁকা ছিলও না। ভর্তি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অন্যান্য জায়গায় সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় বহু পড়ুয়া ছেড়ে চলে গিয়েছে। আর সংরক্ষিত আসনগুলি ফাঁকা আছে। সময় বাড়িয়েও পড়ুয়া মেলেনি।’‌ আবার বেশিরভাগ জেলায় খালি আসনের হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষদের মত, নয়া শিক্ষা নীতি নিয়ে দোটানায় পড়ুয়ারা আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বিশেষ করে চার বছরের অনার্স কোর্সে বহু পড়ুয়ার আগ্রহ নেই। আর তার জেরেই ফাঁকা আসনের সংখ্যা বেড়েছে। তবে আবার সময়সীমা বাড়ে কিনা এখন সেটাই দেখার।