মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় সম্পর্কে আরএসএস কী ধারণা পোষণ করে তা নিয়ে নানা সময় নানা জল্পনা হয় গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। তবে সেপ্টেম্বরের শেষাশেষি আরএসএসের পত্রিকা স্বস্তিকাতে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। অনেকের মতে সেখানে অভিষেককে ঘিরে কিছুটা হলেও নরম সুর। এরপরই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে নানা চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে পত্রিকার পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্য়মকে জানানো হয়েছে লেখকের মতামতের স্বাধীনতা রয়েছে।
এদিকে আরএসএস ও বিজেপি কর্মীদের মোবাইলে ঘুরছে এই লেখা। আর ঠিক এমন সময় এই লেখা নিয়ে শোরগোল যে সময়ে ইডি তলব করেছে অভিষেককে। যে সময় দিল্লির বুকে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে চাইছেন অভিষেক। যে সময় অভিষেকের গ্রেফতারি কবে হবে তা নিয়ে প্রহর গুণছে বিজেপির অনেকেই। সেই সময়তেই সামনে এসেছে এই নিবন্ধ। সেটা আবার আরএসএসের মুখপত্রে।
আর সেখানেই লেখা হয়েছে,’ রাজ্য জুড়ে সারা দিন কীর্তনের মতো বেজে চলেছে পিসি-ভাইপো চোর। ‘এই লাইনটিকে ঘিরে অনেকে আবার একে একে দুই করে ফেলেছেন। কারণ এই রাজ্যে রাত দিন এই পিসি ভাইপো চোর বলে যিনি উল্লেখ করেন তিনি অবশ্য়ই শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু লেখায় শুভেন্দুর নাম উল্লেখ করে কিছু বলা হয়নি। তবে কি শুভেন্দুর এই ’কীর্তন’ ভালো লাগে না আরএসএসপন্থীদের?
প্রবন্ধের লেখক নির্মাল্য মুখোপাধ্য়ায়। ‘অবোধের গোবধে আনন্দ শীর্ষক এই লেখা। অভিষেকের আটক ইন্দ্রিয় সুখ না রাজনৈতিক প্রয়োজন? ’ এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে।
লেখা হয়েছে, ‘এটা ঠিক অনেকের কাছে মূল সমস্য়া, অভিষেক কেন জেলের বাইরে? এটা অবান্তর চিন্তা। তদন্তকারীদের মতে গ্রেফতার তদন্তের অংশ। পুরো তদন্ত নয়। মনে হয় একমুখী ভাবনা এখানকার বিরোধীদের সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে।’
অনেকেই মনে করছেন, একদিকে যখন বিজেপি সমস্বরে অভিষেকের গ্রেফতারির দাবি করছেন। সুর চড়াচ্ছেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। তখন আরএসএসের দলীয় মুখপাত্রে ‘স্বাধীন’ লেখায় লেখা হল, মনে হয় একমুখী ভাবনা এখানকার বিরোধীদের সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে।
এখানেই প্রশ্ন তবে কি একমুখী ভাবনায় চালিত রাজ্য বিজেপি? তবে কি অভিষেকের গ্রেফতারি নেহাতই বিজেপির কাছে রাজনৈতিক প্রয়োজন? নতুন সব প্রশ্নকে উসকে দিয়েছে স্বস্তিকার প্রবন্ধ। আর অভিষেককে ঘিরে বিজেপি আর আরএসএসের নীতির মধ্যে ফারাক কতটা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠল বাংলায়।