অঙ্কে স্নাতক হয়েও জোটেনি ভালো চাকরি, অবসাদে আত্মঘাতী যুবক

বিজ্ঞানে স্নাতক হওয়া সত্ত্বেও মেলেনি ভালো চাকরি। ফলে বাধ্য হয়ে কাজ করতে হচ্ছিল একটি ডালকলে। সেখানেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে উল্টোডাঙা থানার ক্যানাল সার্কুলার রোডে যুবকের নাম উদয় মণ্ডল। তিনি বাঁকুড়ার বাসিন্দা। পুলিশের অনুমান, স্নাতক হওয়া সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়ায় অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। যুবকের আকস্মিক মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত তাঁর পরিবার।

আরও পড়ুন: বিজেপি বিধায়কের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ, খুন না আত্মহত্যা?‌ তদন্তে পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার হীরাবাঁধ থানা এলাকার পাখুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক। তাঁর এক আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি কলকাতার ওই ডালকলে লকডাউনের পরে কাজ পেয়েছিলেন। সেখানে মাসে ১২ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে বেতন পেতেন। কিন্তু, অঙ্কে স্নাতক হওয়া সত্ত্বেও কাজ না মেলায় তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।

তিনি যে আত্মীয় সঙ্গে কলকাতা গিয়েছিলেন তাঁর নাম চিত্তরঞ্জন সাহানা। তিনি জানান, ডালকলে মূলত হিসাবনিকাশ দেখভাল করতেন ওই যুবক। গাড়িতে কতটা মালপত্র ওঠানো নামানো হচ্ছে সেবিষয়ে খোঁজ খবর রাখতেন। তবে স্বাভাবিকভাবেই উচ্চ শিক্ষিত হওয়ায় তিনি খুশি ছিলেন না। জানা গিয়েছে, সকালে খেতে যাওয়ার নাম করে বেরিয়েছিলেন। তারপরে আর তাঁকে দেখা যায়নি। শেষে মেশিনের ঘরে গলায় গামছা জড়ানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। বড় ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা তরণীলাল মণ্ডল এবং ভাই সুজয় মণ্ডল। 

জানা গিয়েছে, গ্রামে আগে টিউশনি পড়াতেন ওই যুবক। কলকাতায় গিয়েছিলেন চাকরির খোঁজে। চাকরির পরীক্ষাও তিনি দিচ্ছিলেন। এমনকী সরকারি পরীক্ষার জন্য ডালকলের মালিকও তাঁকে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন। এখানে সেখানে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। আরও জানা গিয়েছে, ১০ বছর আগে ওই যুবকের মা রান্না করার সময় মাটির দেওয়ার চাপা পড়ে মারা গিয়েছিলেন। ফলে অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন ওই যুবক। স্বাভাবিকভাবেই ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন যুবকের বাবা। খবর পাওয়ার পর কলকাতায় ছুটে আসেন তাঁর ছোট ভাই। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া এর পিছনে আদৌও কোনও রহস্য রয়েছে কিনা তা জানার জন্য মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে উল্টোডাঙা থানার পুলিশ।