অভিষেকের রাজভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে অনুপস্থিত রাজ্যপাল, মুখোমুখি হবেন কি?

মঙ্গলবার রাতে নয়াদিল্লি থেকে রাজভবন ঘেরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেদিন বেশি রাতেই রাজভবন ত্যাগ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। একদম সোজা চলে গেলেন নিজের রাজ্য কেরলে। এভাবে বড়লাট পালালেন কেন?‌ উঠছে প্রশ্ন। যদিও রাজভবন সূত্রে খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি ঘোষণার আগে থেকেই কেরল যাওয়া ঠিক ছিল রাজ্যপালের। তাই তিনি কলকাতা ছেড়েছেন। এই খবর রাজভবন দিলেও তা বাংলার মানুষ মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, একলাখ মানুষের জমায়েত শুনে ভয় পেয়েছেন রাজ্যপাল।

এবার তাহলে কর্মসূচির কী হবে?‌ নয়াদিল্লি থেকে এখন সবাই ফিরে এসেছেন। ওখানে তাঁদের উপর হওয়া ঘটনা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, মন্ত্রী সুজিত বসু, জাভেদ খান এবং সাংসদ দোলা সেন। নয়াদিল্লিতে অভিষেক বলেছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা না করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়েছেন। রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি। আমরা তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাংলার বঞ্চিত মানুষের কথা বলব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নেননি সেই চিঠিগুলি আমরা রাজ্যপালকে দেব।’ কিন্তু রাজ্যপাল রাজভবনে নেই। তাই রাজ্যপাল বিহীন ঘেরাও হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব রাজ্যপালের দফতরে কোনও ডেপুটেশন জমা দিতে যান, তাহলে সেই ডেপুটেশনের কপি পাঠিয়ে দেবেন কেরলে রাজ্যপালের কাছে।

রাজ্যপাল কবে আসবেন রাজভবনে?‌ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন এখন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। কারণ রাজ্যপাল ছাড়া রাজভবন অভিযান হয় নাকি। তাই এই অভিযানের তারিখ পিছিয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার কর্মসূচি করে রাজভবনে স্মারকলিপি দিয়ে সেখান থেকে সাংবাদিক বৈঠকও করতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোনটি করবেন এখন পর্যন্ত সেটা জানানো হয়নি। আগের ঘোষিত কর্মসূচিই এখনও বহাল আছে। নয়াদিল্লির মুখার্জি নগর থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক লক্ষ কর্মী নিয়ে রাজভবন ঘেরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে এখন যা পরিস্থিতি তাতে মুখোমুখি হবেন না যুযুধান প্রতিপক্ষ।

আরও পড়ুন:‌ বিধাননগরের স্টেশন মাস্টারকে নোটিশ দিল কলকাতা পুরসভা, কেন এমন ঘটল?‌

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারেরও সংঘাত চলছে। তার উপর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নানা ভাষায় আক্রমণ করেছেন। পাল্টা রাজ্যপালও দিয়েছেন। এই আবহে শাসকদলের ঘেরাও কর্মসূচির অর্থ বেশ চাপের। রাজ্যপাল যদি দেরি করে কেরল থেকে ফেরেন তখন আবার কোনও কর্মসূচি হতে পারে। কারণ নয়াদিল্লিতে মহিলা সাংসদদের উপর যেভাবে দিল্লি পুলিশ আছড়ে পড়েছিল এবং টানাহ্যাঁচড়া করেছিল সেটা তৃণমূল কংগ্রেস ভালভাবে নেয়নি। সুতরাং বাংলায় পাল্টা জবাব হতেই পারে। যদিও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেদের ঘোষিত কর্মসূচিতে অনড় রয়েছে। তাই কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।