তিস্তার জলে বানভাসী উত্তরবঙ্গ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তড়িঘড়ি ছুটলেন মন্ত্রী–আমলারা

ভোর থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি শুরু হয় উত্তরবঙ্গে। আর তার জেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে আতঙ্কে কেঁপে উঠেছে উত্তরবঙ্গের মানুষজন। ইতিমধ্যেই ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক জলে ভেসে গিয়েছে। সিকিম–দার্জিলিং পাহাড় পেরিয়ে তিস্তা নদীর জল শিলিগুড়ির দিকে নামতে শুরু করেছে। জলপাইগুড়ি জেলায় এখন বানভাসী পরিস্থিতি। আর এই ঘটনার খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন। আর তারপরই উত্তরবঙ্গে ছুটেছেন মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য এবং আইএএস অফিসাররা।

আজ, বুধবার ভোরে উত্তর সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। তার জেরে বাঁধের জল বেরিয়ে আসে। লোনক হ্রদ ফেটে জল তিস্তার উপর দিয়ে বইতে থাকে। সুতরাং তিস্তার জলস্তর ২০ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়। জলপ্লাবনে কিছুই আর অক্ষত নেই। নদীর খুব কাছেই ছিল একটি সেনা ছাউনি। সেটাও ভেসে গিয়েছে। নিখোঁজ ছাউনির ২৩ জন সেনা জওয়ান। এমনকী ভেসে যায় সেনার ৪১টি গাড়ি। এখন তিস্তার হড়পা বানে বহু সাধারণ মানুষও নিখোঁজ বলে সূত্রের খবর। জলের তোড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। গোটা জাতীয় সড়কই যে কোনও সময় তিস্তার গর্ভে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে তিস্তার জল ক্রমশ এগিয়ে আসছে উত্তরবঙ্গ জেলাগুলির দিকে। এই পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী এক্স হ্যান্ডলে বার্তা দেন। ২৩ জন সেনা জওয়ানের নিখোঁজের ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন। আর তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে। রাজ্যের পক্ষ থেকে সবরকম সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি যেন হাতের বাইরে চলে না যায় তার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির নীচু এলাকা থেকে মানুষকে সরানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের সিনিয়র মন্ত্রী এবং সিনিয়র আইএএস অফিসাররা উত্তরবঙ্গের দিকে রওনা হয়েছেন।

আরও পড়ুন:‌ পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে চলল গুলি, মুর্শিদাবাদে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী খুনে আলোড়ন

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ মুষলধারে বৃষ্টি কিছুতেই থামছে না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। ইতিমধ্যেই তিস্তার জলের গতিতে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি থেকে রাস্তা। কিছু মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। তিস্তার বিপুল জল সমতলে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি কেমন হবে ভেবে শিউরে উঠছেন মানুষজন। তিস্তায় এখন লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। কিছু দেখা যাচ্ছে না জল ছাড়া। এখন সেখানে মানুষ আতঙ্কিত। তাঁদের সরিয়ে ত্রানের ব্যবস্থা করতেই নবান্ন থেকে অফিসাররা ছুটেছেন। এখন নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর জলস্তর অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। গজলডোবায় জল ঢুকে পড়েছে।