Abhishek Banerjee: ‘জমিদারদের সামনে…’, শাহের পুলিশের হাতে আটক হয়ে এবার রাজভবন অভিযানের ডাক অভিষেকের

দিল্লিতে তৃণমূল সাংসদদের আটক করা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড। পরে রাতে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বল্প কথায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তাঁরা মাথা নত করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন অভিষেক। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গাড়ির ফুটবোর্ডে উঠে সমর্থকদের উদ্দেশে স্লোগান দিচ্ছেন তিনি। সেই ছবিরই ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘জমিদারদের কাছে মাথা নত করবে না বাংলা।’ এদিকে দিল্লিতে শাহের পুলিশের হাতে ‘হেনস্থার’ শিকার হওয়ার প্রতিবাদে কলকাতায় কর্মসূচি পালনের ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতায় রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন তিনি। ওই দিন বেলা ৩টের সময় রাজভবন অভিযান হবে বলে ঘোষণা করেন অভিষেক।

গতকাল দিল্লির কৃষিভবনে কী ঘটেছে? গতকাল সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লির কৃষিভবনে গিয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। অভিষেক দাবি করেন, প্রথমে বেলা ১২টার সময় দেখা করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। পরে প্রতিমন্ত্রী জানান, তাঁর ফ্লাইট দিল্লিতে অবতরণ করবে বিকেল পাঁচটায়। এই আবহে সন্ধ্যা ৬টায় তিনি দেখা করবেন তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বেজে গেলেও তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এর আগে নাকি মন্ত্রী বিকেল ৪টের সময় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। এই আবহে কৃষি ভবনের ভেতরেই ধর্নায় বসে পড়েন তৃণমূল নেতারা। এরপরই শুরু হয় ধুন্ধুমার কাণ্ড। পুলিশ চ্যাংদোলা করে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল সাংসদদের। আটক করা হয় তাদের। পরে অবশ্য রাতেই ধৃত তৃণমূল নেতাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় বিজেপির তীব্র নিন্দা জানান তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক দীর্ঘ পোস্টে মমতা লেখেন, ‘আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি অন্ধকার, অশুভ দিন। বাংলার জনগণের প্রতি বিজেপির ঘৃণা, দরিদ্রদের অধিকারের প্রতি বিজেপির অবজ্ঞা দেখা গেল আজ। পাশাপাশি বিজেপি যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্পূর্ণ ভাবে বিসর্জন দিয়েছে, তাও প্রকাশ পেল আজ।’ মমতা আরও লেখেন, ‘প্রথমত, তারা নির্লজ্জভাবে বাংলার দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ তহবিল আটকে রেখেছিল। এবং যখন আমাদের প্রতিনিধিদল দিল্লিতে পৌঁছে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে চায় তখন তারা আটকায়। রাজ্যের মানুষের দুর্দশার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আমরা। তাই আমাদের সঙ্গে নির্মমতা দেখাল কেন্দ্র – প্রথমে রাজঘাটে এবং তারপরে কৃষি ভবনে।’ দিল্লি পুলিশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা লেখেন, ‘দিল্লি পুলিশ, বিজেপির ‘হাত’ হিসেবে কাজ করছে। আমাদের প্রতিনিধিদের নির্লজ্জভাবে হেনস্থা করেছে তারা। তাদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সাধারণ অপরাধীদের মতো পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ তারা ক্ষমতাসীনদের কাছে সত্যি কথা বলার সাহস দেখিয়েছিল। বিজেপির ঔদ্ধত্যের কোনও সীমা নেই। এবং তাদের অহংকার তাদের অন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার কণ্ঠস্বরকে দমন করতে তারা এখন সব সীমা অতিক্রম করেছে বিজেপি!’ সবশেষে মমতার বার্তা, ‘কিন্তু আমরা ভয় করব না ভয় করব না, দু’বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না।’