কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে গতকাল দেখা করার কথা ছিল তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করতে পেরে কৃষি ভবনে ধরনায় বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁদের সময় দিয়েও দেখা করেননি মন্ত্রী। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেন, তৃণমূল সাংসদদের জন্য তিনি আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। মন্ত্রীর এহেন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মহুয়া মৈত্র।
গতকাল রাতে সাধ্বী নিরঞ্জন একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার জন্য আড়াই ঘণ্টা নিজের অফিসে অপেক্ষা করেছিলেন তিনি। পোস্ট করা ভিডিয়োতে দেখা যায়, সাধ্বী নিজের অফিসে কাজ করছেন। তাঁর সামনে টিভি চলছে। এদিকে অফিস ঘরের ঘড়িতে তথন সোয়া ৮টা বাজে প্রায়। এই ভিডিয়োর ক্যাপশনে সাধ্বী লেখেন, ‘আজ আড়াই ঘণ্টা সময় আমার নষ্ট হল। আজ আমি তৃণমূল সাংসদের জন্য অপেক্ষা করতে করতে সাড়ে আটটার সময় অফিস থেকে বেরিয়েছি। আমার তথ্য অনুযায়ী, তৃণমূলের সাংসদ ও বাংলার মন্ত্রীদের প্রতিনিধি দল ৬টায় আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েছিল। কিন্তু পরে তৃণমূল কর্মীদের জনসমক্ষে ডেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। এটা অফিস ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছিল। তৃণমূল বৈঠকের নির্ধারিত বিষয় থেকে সরে আসে। কারণ তাদের উদ্দেশ্য দাবি তুলে ধরা নয় বরং তাদের উদ্দেশ্য ছিল রাজনীতি করা। অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।’
এদিকে সাধ্বী নিরঞ্জনের এই পোস্টের জবাব দেন মহুয়া মৈত্র। সাধ্বীর ভিডিয়ো রিটুইট করে ক্যাপশনে মহুয়া লেখেন, ‘সরি সাধ্বী নিরঞ্জন। কিন্তু আপনি একজন মিথ্যাবাদী অনেককিছু (আমি ভদ্র ভাবেই বলতে চাইলাম)। আপনি আমাদের প্রতিনিধি দলকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছেন। আপনি সমস্ত নাম যাচাই করেছেন। আমাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আগে প্রত্যেককে চেক করেছেন। আমাদের ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছেন। এবং তারপরে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন আপনি।’
গতকাল দিল্লির কৃষিভবনে কী ঘটেছে? গতকাল সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লির কৃষিভবনে গিয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। অভিষেক দাবি করেন, প্রথমে বেলা ১২টার সময় দেখা করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। পরে প্রতিমন্ত্রী জানান, তাঁর ফ্লাইট দিল্লিতে অবতরণ করবে বিকেল পাঁচটায়। এই আবহে সন্ধ্যা ৬টায় তিনি দেখা করবেন তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বেজে গেলেও তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এর আগে নাকি মন্ত্রী বিকেল ৪টের সময় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। এই আবহে কৃষি ভবনের ভেতরেই ধর্নায় বসে পড়েন তৃণমূল নেতারা। এরপরই শুরু হয় ধুন্ধুমার কাণ্ড। পুলিশ চ্যাংদোলা করে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল সাংসদদের। আটক করা হয় তাদের। পরে অবশ্য রাতেই ধৃত তৃণমূল নেতাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।