প্রোটিয়াদের সামনে দাঁড়াতেই পারলো না অস্ট্রেলিয়া

বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটা জমজমাট হওয়ার ইঙ্গিত মিলছিল। প্রোটিয়াদের ৩১১ রানে বেঁধে রাখতে পারলেও অজিদের ব্যাটিংটা হয়ে গেছে ছন্নছাড়া! লখনউয়ে যাচ্ছেতাই ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া টানা দ্বিতীয় পরাজয় দেখেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে। প্রোটিয়ারা টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট আর শ্রেয়তর রানরেটে নিউজিল্যান্ডকে টপকে শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে। 

৩১২ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই প্রোটিয়া বোলিংয়ে তাসের ঘরে পরিণত হয় অজি ব্যাটিং। টপ অর্ডারের কেউ প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। টপ অর্ডারে মিচেল মার্শ (৭), ডেভিড ওয়ার্নার (১৩) ও স্টিভেন স্মিথরা (১৯) কেউ প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বল হাতে আলো ছড়ালেও ব্যাট হাতে ছিলেন পুরোপুরি নিষ্প্রভ। আউট হয়েছেন মাত্র ৫ রানে। ফলে শুরুতেই ম্যাচ থেকে তারা ছিটকে গেছে।

৭০ রানে ৬ উইকেট হারানোয় বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ১২৯। ভাগ্য ভালো স্টার্ক-লাবুশেন মিলে ৬৯ রানের জুটি গড়েছিলেন। এই জুটি হার এড়াতে না পারলেও ব্যবধান কমিয়েছে। ২৭ রান করে দলের ১৩৯ রানে আউট হন স্টার্ক। তার পর লাবুশেন ৭৪ বলে ৪৬ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে আউট হলে বেশিক্ষণ টেকেনি অজিদের ইনিংস। ৪০.৫ ওভারে ১৭৭ রানে অলআউট হয়েছে তারা।

৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। দুটি করে নিয়েছেন মার্কো ইয়ানসেন, কেশব মহারাজ ও তাবরাইজ শামসি। একটি নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিদি।

শুরুতে টস জিতে প্যাট কামিন্স বলেছিলেন পিচ কেমন আচরণ করবে সেটি নিয়ে নিশ্চিত নন তিনি। এই কারণে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন। পরে দেখা গেলো প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে তা পুরোপুরি লুফে নিয়েছেন প্রোটিয়া দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও তেম্বা বাভুমা।

কুইন্টন ডি কক যেভাবে তাণ্ডব শুরু করেছিলেন তাতে আরও বড় স্কোরের সুযোগ ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে ৩১২ রানের লক্ষ্যই দিতে পারে প্রোটিয়া দল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে তারা ৩১১ রান করতে পেরেছে।

১৯.৪ ওভারে দুই ওপেনার মিলে ১০৮ রান যোগ করেছেন। অধিনায়ক তেম্বা বাভুমাকে ৩৫ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ম্যাক্সওয়েল।

যদিও অপরপ্রান্তে থাকা কুইন্টন ডি কককে থামানো যায়নি। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। এই সময়ে রাসি ফন ডার ডুসেন সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করলেও ২৬ রানে আউট হয়েছেন। তার পর চলে ডি কক শো। ১০৬ বলে ১০৯ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েই রাশ টেনে ধরতে অবদান রাখেন ম্যাক্সওয়েল। ডি ককের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ৫টি ছয়ের মার। ম্যাচসেরাও তিনি।

তার পর মারক্রাম চেষ্টা করেছেন ইনিংসটা টেনে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু দ্রুত গতিতে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। মারক্রামকে ৪৪ বলে ৫৬ রানে থামিয়েছেন জশ হ্যাজেলউড। হাইনরিখ ক্লাসেনও ২৯ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষ দিকে স্কোরটা তিনশ ছুঁয়েছে ডেডিভ মিলার ও মার্কো ইয়ানসেনের মিনি ঝড়ে। মিলার ১ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ বলে ১৭ রান করেছেন। ইয়ানসেন ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ২৬।

ডেথ ওভারের সময় অজিদের দারুণ বোলিংয়েই প্রোটিয়া দল বেশি দূর যেতে পারেনি। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অজিদের ক্যাচ মিসের ঘটনা না ঘটলে স্কোরটা আরও কম হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ৫টি ম্যাচ হাতছাড়া করেছে অজি দল।  

অজিদের হয়ে ৩৪ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৫৩ রানে দুটি নেন মিচেল স্টার্কও। একটি করে নিয়েছেন জশ হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পা।