Jaishankar on Chinese Debt Trap: চিনা ‘ফাঁদ’ থেকে সতর্ক থাকুন, ভারত মহাসাগরের দেশগুলিকে সতর্কবার্তা জয়শংকরের

কয়েক মাস আগেই পাকিস্তানকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার ‘অর্থসাহায্য’ করেছিল চিন। এর আগে এভাবেই ‘অর্থসাহায্য’-র নাম করে শ্রীলঙ্কাকে টাকা দিয়েছিল চিন। সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগও করেছিল বেজিং। চিনের সেই ‘সাহায্যের’ ঠেলাতেই পরবর্তী কালে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। এই আবহে ভারত মহাসাগরের দেশগুলিকে নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ‘ঋণের ফাঁদ’ নিয়ে সতর্ক করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। সরাসরি চিনের নাম না নিয়েই জয়শংকর বলেন, ‘অনেক দেশিই অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করে লুকোনো স্বার্থে।’ (আরও পড়ুন: লাইনচ্যুত হয় ২১টি কামরা, নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আরও বাড়ল মৃতের সংখ্যা)

ইন্ডিয়ান ওসেন রিম অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে জয়শংকর গতকাল বলেন, ‘রাষ্ট্রসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী ভারত মহাসাগরকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মুক্ত রাখতে হবে।’ পরে সাংবাদিক সম্মলনে জয়শংকর বলেন, ‘ভারত মহাসাগরের দেশগুলি একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ভাবে থাকতে চায়। আঞ্চলিক সহযোগিতার মূল্যবোধে এগিয়ে চলে এই দেশগুলি।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন চিনপন্থী প্রার্থী ইব্রাহিম মহম্মদ সোলিহ। নির্বাচনে জিতেই তিনি দাবি করেছিলেন, নিজের দেশ থেকে ভারতীয় সেনাকে সরিয়ে দেবেন তিনি। এই আবহে ইন্ডিয়ান ওসেন রিম অ্যাসোসিয়েশনে জয়শংকরের বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারত মহাসাগরে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের দিকে নজর দিয়েছিল চিন। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে ইতিমধ্যেই ঋণের ফাঁদে ফেলে নিজেদের পকেটে ভরেছে চিন। শ্রীলঙ্কাকেও চাপে রেখেছে বেজিং। এই আবহে জয়শংর বলেন, ‘ইন্ডিয়ান ওসেন রিম অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য দেশগুলিকে এগিয়ে যেতে হলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, তার মোকাবিলা করতে হবে। সমুদ্রপথে অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমাদের একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে, নিরাপত্তার দিক দিয়েও পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সবাইকে জানতে হবে যে কোথায় আমাদের জন্য বিপদ লুকিয়ে আছে। অনেকের লুকোনো স্বার্থ রয়েছে। এর জেরে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করে অন্য দেশকে অযথা ঋণের ফাঁদে ফেলে অনেকেই। এর থেকে দূরে থাকতে হবে। আমাদের আরও বেশি অবগত হতে হবে এই বিষয়ে। পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে। তাহলেই এই ঋণের ফাঁদে পা দেওয়া থেকে বাঁচা সম্ভব হবে।’ এর আগে শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরে বিনিয়োগ করেছিল চিন। তবে সেই বন্দরকে কাজে লাগিয়ে সেভাবে কোনও অর্থনৈতিক লাভ পায়নি শ্রীলঙ্কা। এর ফলে চিনের ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হয় তারা। এরপর ৯৯ বছরের জন্য এই বন্দরের লিজ নিয়ে নেয় চিন। যা ভারতের নিরাপত্তার দিক থেকে উদ্বেগের। এভাবেই ভারত মহাসাগরে ভারতকে ঘিরে ফেলতে চাইছে চিন। আর তার জন্য ছোট ছোট দেশগুলিকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে।