Sikkim Flash Flood: হ্রদের পাড় ভেঙে যে কোনও সময় ভাসতে পারে সিকিম, আগে থেকেই জানত সরকার

হ্রদভাঙা জলে যে সিকিমে বিপর্যয় ঘনাতে পারে তা আগে থেকেই জানত ভারত সরকার। এক প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। দক্ষিণ লহনক নামে যে হ্রদ ভেঙে সিকিমে বিপর্যয় ঘনিয়েছে গত সেপ্টেম্বরেই সমীক্ষা চালিয়েছে ন্যশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি। হ্রদটি বিপদঘন্টি লাগানোর কাজও শুরু করেছিল তারা। কিন্তু তার মধ্যেই নেমে আসে বিপর্যয়।

সিকিমে হ্রদভাঙা জলের হড়পা বানে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিখোঁজ আরও ১০০। মৃতদের মধ্যে অন্তত ৯ জন সেনা জওয়ান। তিস্তার তাণ্ডবে বহু জায়গায় ভেসে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। তলিয়ে গিয়েছে বহু বাড়ি।

বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত মাসেই সিকিমের ২টি বিপজ্জনক হ্রদে সমীক্ষা চালায় জাতীয় বিপর্যয় প্রবন্ধন কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে একটি হল দক্ষিণ লহনক হ্রদ। উত্তর সিকিমে তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত অতি উচ্চ এই হ্রদ বরফগলা জলে পুষ্ট। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হ্রদটি যে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে তা আগে থেকেই অনুমান করা গিয়েছিল। বিশ্বউষ্ণায়নের ফলে হিমবাহের বরফ গলার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় গত তিন দশকে হ্রদটির আকার প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১৬ সালে এই হ্রদটি পাড় ভেঙে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় সরকার হ্রদের কিছুটা জল বার করে দিয়েছিল। কিন্তু হ্রদে কোনও ওয়ার্নিং সিস্টেম বসানো হয়নি।

দক্ষিণ লহনক হ্রদের জল পাহাড়ি নদীর মাধ্যমে এসে পড়ে তিস্তা নদীতে। সিকিমে তিস্তার প্রথম বাঁধ তৈরি করা হয়েছে চুংথাংয়ে। তারও ওপরে তিস্তার সঙ্গে এসে মেশে সেই পাহাড়ি নদী। চুংথাং বাঁধের কর্মীরা জানাচ্ছেন, গত ৪ অক্টোবর যখন বাঁধের সমস্ত গেট খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে হিমালয়ে হিমবাহ গলার হার বাড়ছে। যার ফলে ক্রমশ আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে পাহাড়ি হ্রদগুলি। এমনকী নতুন নতুন হ্রদ সৃষ্টি হচ্ছে। যে কোনও সময় মাটি ধসে, মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বা তুষারধসের জেরে এই হ্রদগুলি থেকে বিপর্যয় ঘনাতে পারে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতেরর তরফে জানানো হয়েছে এই ধরণের ৫৬টি হ্রদের পাড় ভাঙলেই সতর্ক ঘণ্টি বাজবে এমন প্রযুক্তির ব্যবহার করতে চলেছে তারা। তার মধ্যে সিকিমেই রয়েছে বিপজ্জন ২০টি হ্রদ। কেন এই হ্রদগুলিতে এতদিন এই প্রযুক্তি বসানো হয়নি তা নিয়ে বিবিসির প্রশ্নের উত্তর দেয়নি দেশের কোনও সংস্থা।