বৃদ্ধের মৃত্যুতে শোকে কাতর বাঁদর! ৪০ কিমি দূরে দেহ দাহ পর্যন্ত সঙ্গেই থাকল

সাধারণত কোনও মানুষের মৃত্যু হলে শোকের ছায়া নামে সেই পরিবারে। কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়-স্বজনরা। তবে উত্তর প্রদেশে একটি অবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটল। এক বৃদ্ধের মৃত্যুতে শোকে কান্না করতে দেখা গেল একটি বাঁদরকে। একেবারে মানুষের মতোই বৃদ্ধের মৃতদেহকে জড়িয়ে ধরতে দেখা গেল শোকাহত বাঁদরটিকে। শুধু তাই নয়, বাড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হয় বৃদ্ধের দেহ। সেখানেও চলে যায় বাঁদরটি। এমনই একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। একজন মানুষের প্রতি পশুর এরকম ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ সকলেই, যা সকলের হৃদয় স্পর্শ করে নিয়েছে।

আরও পড়ুন: ১০০ হনুমানের মৃতদেহ উদ্ধার গ্রামের কাছেই, রামভক্তদের কি বিষ খাইয়ে খুন?

কী ঘটেছিল? 

ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের আমরোহা জেলায় ঘটেছে। বৃদ্ধের নাম রামকুনওয়ার সিং। অসুস্থজনিত কারণে গত মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়। শেষ দর্শনের সময় তাঁর দেহ ঘিরে ভিড় করেছিলেন আত্মীয় পরিজন। ঠিক সেই সময় বাঁদরটি আসে। কিছুক্ষণ বাঁদরটিকে মৃতদেহের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। এরপর বাঁদরটি বৃদ্ধের দেহ জড়িয়ে ধরে শোক পালন করতে থাকে। বাঁদরটির চোখে জল দেখতে পান স্থানীয়রা। মানুষের প্রতি বাঁদরের এরকম ভালোবাসা দেখে রীতিমতো অবাক এবং মুগ্ধ হয়ে যান স্থানীয়রা। দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার সময় বাঁদরটি বৃদ্ধকে জড়িয়ে ধরলে তাকে সরানোর চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। কিন্তু আবার বাঁদরটি বৃদ্ধকে জড়িয়ে ধরে। ওই এলাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে গঙ্গার ঘাট। সেখানে দাহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বৃদ্ধের দেহ। জানলে অবাক হবেন, বাঁদরটিও গাড়িতে করে গঙ্গার ঘাটে পৌঁছয়। গঙ্গার ঘাটে গিয়ে বাঁদরটি অনেকক্ষণ বৃদ্ধের কাছে বসেছিল। শুধু তাই নয়, মৃতদেহ যখন দাহ করা হয়েছিল তখনও কাছেই ছিল বাঁদরটি।

বাঁদরের কেন এই আচরণ?

ওই বৃদ্ধ আমরোহা জেলার জয়া শহরের মহল্লা জাতভ কলোনীর বাসিন্দা।  রামকুনওয়ার সিংয়ের ছেলে সুনীল জানান, রামকুনওয়ার সিং প্রতিদিন এই বাঁদরটিকে ছাদে খাওয়াতেন। গত ২ মাস ধরে তিনি বাঁদরটিকে খাওয়াচ্ছিলেন। বানরটি এসে রামকুনওয়ার সিংয়ের কাছে বসত এবং রামকুনওয়ার সিং তাকে রুটি খেতে দিত। এরপর প্রতিদিনই বাঁদরটি তার কাছে আসতে থাকে। স্বজনরা আরও জানান, গত মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে মারা যান রাম। বুধবার সকালে বাঁদরটি যথারীতি খাবার খেতে এলে বাড়িতে ভিড় দেখতে পায়। প্রথমে বাঁদরটি কিছু বুঝতে না পারলেও ভিতরে গিয়ে বিয়ারটি দেখে শেষ দর্শন নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে এবং তখন বাঁদরটি সেখানে বসে। স্থানীয় লোকজন জানান, বাঁদরটি কান্না করেছিল।