স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে সিকিম, ভয়াবহ দুর্যোগ কাটিয়ে এবার খুলছে স্কুল–কলেজ – Flood-hit Sikkim limping back to normal

ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছিল সিকিমে। তার জেরে ভেসে গিয়েছিল উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার চুংথামের বিস্তীর্ণ এলাকা। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বানভাসী চার জেলায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করেছিল সিকিমের শিক্ষা দফতর। আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিয়োং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গন জেলার সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে সিকিম। তাই আজ, সোমবার থেকে খুলছে স্কুল, কলেজ। পড়ুয়াদের মনে যাতে কোনও শিক্ষা নিয়ে চাপ না পড়ে এবং দ্বিধা তৈরি না হয় তাই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।

সিকিমে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে এত তাড়াতাড়ি স্কুল–কলেজ খোলা যাবে সেটা কেউ ভাবতে পারেননি। অনেক অভিভাবক থেকে পড়ুয়ারা অনিশ্চয়তার উপর সেসব ছেড়ে দিয়েছিলেন বলেই খবর। চুংথামে যে ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়েছিল তাতে কবে স্কুল খুলবে?‌ এই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন সিং তামাং। তাঁর নির্দেশেই স্কুল–কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি অনেকটা আয়ত্ত্বে আনা গিয়েছে বলে খুলে দেওয়া হল স্কুল–কলেজ। পাকিয়োং, গ্যাংটক, নামচি ও মঙ্গন জেলার সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার নির্দেশিকা জারি হয়েছে।

এদিকে মাঝে অনলাইন ক্লাসও শুরু হয়েছিল পড়ুয়াদের। তবে তার মধ্যে সিকিমের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস করার কথা বলা হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি যাতে না হয় তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন স্বাভাবিকের পথে সিকিম। সেক্ষেত্রে স্কুল–কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হল। এখন পঠনপাঠন স্কুলে গিয়ে করতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। রাস্তাঘাট অনেকটা সারিয়ে তোলা গিয়েছে এই কদিনে। তাই পড়ুয়াদের কোলাহল আবার শোনা যাচ্ছে শ্রেণিকক্ষে। এমনকী এই সিদ্ধান্তে খুশি পড়ুয়ারা।

আরও পড়ুন:‌ টাকার হদিশ পেতে সক্রিয় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, তদন্তের নির্দেশ দিলেন রেজিস্ট্রার

অন্যদিকে চলতি মাসেই মাঝরাতে লোনক হ্রদের হিমবাহ বিস্ফোরিত হয়ে বানভাসী হয়ে যায় চুংথামের বিস্তীর্ণ এলাকা। এক মুহূর্তের মধ্যে ভেসে যান ১০২ জওয়ান। তারপর তিস্তা নদীর জল বেড়ে বানভাসী হয় সংলগ্ন এলাকা। প্রায় দোতলা বাড়ি সমান জল উঠে যায়। বহু মানুষ নিখোঁজ হয়ে যান। আটকে পড়েন বহু পর্যটক। পলি সরতে শুরু করলে ধ্বংসের ভয়াল ছবি প্রকাশ পায়। বিপুল পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়। সিকিম সরকার সূত্রে খবর, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মোট ৮৫ হাজার ৮৭০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে রাজ্যের অন্তত ১,৭১৬টি বাড়ি। ২,৫৬৩ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তাই খুলেছে স্কুল–কলেজ।