গাজার হাসপাতালে হামলা, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ

গাজার আল আহলি আরবি হাসপাতালের বোমা হামলার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এটি আরব বিশ্বে বাইরেও প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে বোমা বিস্ফোরণে ৫ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

ফরাসি  বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানপন্থি সশস্ত্র শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর আহ্বানে বৈরুতে জড়ো হয়েছেন শত শত বিক্ষোভকারী। এ সময় মার্কিন দূতাবাস ঘেরাও করেছেন তারা। বিক্ষোভের সময় লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনী সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। মার্কিন দূতাবাসে পাথর নিক্ষেপ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। দূতাবাসের কাছাকাছি একটি ভবনে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এএফপি জানিয়েছে, বৈরুতে ফরাসি দূতাবাসে প্রতিবাদকারী জড়ো হয়েছিলেন। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিশ। ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ ও ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’ স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। হিজবুল্লাহ পতাকা মিছিল বের করেছে। বিক্ষোভকারীরা দূতাবাসের প্রবেশদ্বারে পাথর ছুঁড়েছেন।

জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ইসরায়েলি দূতাবাসে হামলার চেষ্টা করেছেন বিক্ষোভকারীরা। হামাসের সমর্থনে স্লোগান দিয়েছেন তারা। তখন ইসরায়েলের দূতাবাস বন্ধ এবং শান্তি চুক্তি বাতিলের দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা।

জর্ডানে প্রতিবাদী পোস্টার। ছবি: রয়টার্স

বুধবার ভোরে তেহরানে কয়েকশ বিক্ষোভকারী ব্রিটিশ ও ফরাসি দূতাবাসের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। ‘ফ্রান্স নিপাত যাক, ইংল্যাল্ড নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দিয়েছেন তারা। ফরাসি দূতাবাসের দেয়ালে ডিমও নিক্ষেপ করা হয়েছে।

এএফপির একজন ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, কয়েক হাজার মানুষ তেহরানের প্যালেস্টাইন স্কোয়ারে জড়ো হয়েছিলেন।

লিবিয়ার সব বয়সী মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ফিলিস্তিনি পতাকা শরীরে লাগিয়ে শহিদ স্কয়ারে মিলিত হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তারা গাজার বাসিন্দাদের সমর্থনে স্লোগান দেন।

টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাজ, মরক্কোর রাজধানী রাবাত এবং ইরাকের রাজধানী বাগদাদেও বিক্ষোভ হয়েছে।

আম্মানে বিক্ষোভ। ছবি: টুইটার

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, গাজার হাসপাতালে বোমা হামলাটি ছিল ‘মৌলিক মানবিক মূল্যবোধ বর্জিত ইসরায়েলি হামলার সর্বশেষ নমুনা’। প্রতিবেদনে  বলা হয়েছে, আঙ্কারায় ইসরায়েলি ও ইস্তাম্বুলের দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়েছিলেন।

মঙ্গলবার রাতে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের কয়েকটি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। রামাল্লায় ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন তারা। শত শত বিক্ষোভকারী রামাল্লার কেন্দ্রীয় মানারা স্কোয়ারে মিছিল করেছেন।

মঙ্গলবার গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় অন্তত ৫০০ জন নিহতের দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতালের এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস। কিন্তু ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দায় অস্বীকার করে বলেছে, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ জঙ্গি গোষ্ঠী হামলা করেছে। ইসলামিক জিহাদ ইসরায়েলি দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।