Durga Puja 2023: নির্জন পাহাড়ের বুকে হয় পুরুলিয়ার হেঁসলার রাজবাড়ির দুর্গাপুজো! রয়েছে এক ঐতিহাসিক ঘটনাও

পুরুলিয়ার জেলার ঝালদার একটি দুর্গম গ্রাম হেঁসলা। বহু যুগ ধরে দেবীর আরাধনা হয় এই গ্রামে। কয়েক শত বছর আগে রাজা দ্বিগ্বীবিজয় প্রতাপ সিংহদেও বারাণসী থেকে এই গ্রামে  আত্মগোপন করতে আসেন।তখন গভীর অরণ্যে ঘেরা ছিল এই গ্রাম। পরে এই গ্রামেই রাজ প্রাসাদ তৈরি করেন রাজা। ধীরে ধীরে দখল করেন আশেপাশের ২২টি মৌজা। তৈরি হয় ঠাকুরদালান , কাছারি , নাটমন্দির , বাগানবাড়ি। ঠাকুরদালানেই শুরু হয় মা দুর্গার আরাধনা। 

আগে দেবী দুর্গার পুজো হত খড়গকে সামনে রেখে। পরে পুরুলিয়ার সংস্কৃতি ছৌ-নাচকে অনুকরণ করে দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরি করে পুজোর প্রচলন হয়। আগে ঢাক বাজিয়ে, গুলি চালিয়ে, পাহাড়ি হেঁসলা নদীর ঝর্ণা থেকে দেবী দুর্গার ঘটের জল আলতেন রাজা। এখনও সেই প্রথা মেনেই ঘটের জল আনা হয়। তবে  আর বন্দুক চলে না। শব্দ-বাজী ফাটিয়ে জল আনতে যাওয়া হয়। বৈষ্ণব মতেই হয় মায়ের আরাধনা।

আরও পড়ুন: পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার এই রাজবাড়িগুলির পুজোয় রয়েছে গায়ে কাঁটা দেওয়া রীতি! যাবেন নাকি?

তবে কালের নিয়মে অনেকটাই জাঁকজমক কমে গিয়েছে এই পুজোর। আগের মতো আর ঝলমল করে না পুজো মণ্ডপ। সময়ের অভাবে চাকচিক্যও কমা গিয়েছে অনেক। তবে আজও পুরনো রীতি মেনে চলেন এই বাড়ির বাসিন্দারা। পুরনো নিয়মেই হয় মায়ের পুজো। 

আরও পড়ুন: এই পুজোতে গ্রাম বাংলায় পাড়ি দিন, জেনে নিন নির্জনে পুজো কাটানোর বিশেষ কিছু ঠিকানা

রাজা বা রাজতন্ত্র এখন আর নেই। যা আছে তা হল ঐতিহ্য। পুজোর চারদিন নতুন করে সাজানো হয় রাজবাড়ি। ভিড়ে থিকথিক করে পুজো মণ্ডপ। দেশ বিদেশ থেকে জমা হয় এই বাড়ির উত্তরসূরীরা। একসঙ্গে হইহই করে কাটান পুজোর কয়েকটা দিন। লোক জনের ভিড় জমে যায় হেঁসলা পাহাড়ের বুকে।

চাইলে এই পুজোয় নির্জনে পাহাড়ের বুকে ঠাকুর দেখে আসতেই পারেন। ভিন্ন স্বাদ নিতে বেরিয়ে আসতে পারেন হেঁসলা পাহাড়ের কোলে। শহর ছাড়িয়ে চলে যেতে পারেন দূরে বহুদূরে।