আতঙ্কের বাতাবরণ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে, আধ মাসের মধ্যেই তিনটি বড় ঘটনা

আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। মাত্র আধ মাসের ব্যবধানে পরপর তিনটি ঘটনা ঘটায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এমনকী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একজন পড়ুয়াকে মারধর, একজন ছাত্রীকে যৌন হেনস্তা করা, এমনকী র‌্যাগিং করার জেরে এক ছাত্র আত্মহত্যা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পর পর এই সব ঘটনা ঘটে যাওয়ায় এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ অক্টোবর মাসের ৭ তারিখ রাতে বিবেকানন্দ হস্টেলের ইতিহাস বিভাগের এক ছাত্রকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বেধড়ক মারধর করে তাঁর নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সিনিয়রদের বিরুদ্ধে। তারপর উদ্ভিদ বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। তাতে সরগরম হয়েছে ক্যাম্পাস। যৌন হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে। ৯ অক্টোবর ওই ছাত্রী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযুক্ত অধ্যাপককে সরিয়ে দেওয়া হয়। ১৫ অক্টোবর রাতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র গাজোলে তাঁর বাড়ি ফিরে আত্মঘাতী হন। পরিবারের অভিযোগ, সিনিয়র পড়ুয়াদের র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে ছেলে। গাজোল থানায় মৃত ছাত্রের পরিবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ এই অভিযোগ পেয়ে গাজোল থানার পুলিশ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্পেক্টর অফ কলেজেস দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‌এমন অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটলেই ভাল হতো। আগামী দিনে আরও সতর্ক হতে হবে।’‌ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইনচার্জ মিঠুন বৈশ্য বলেন, ‘‌একটা অচলাবস্থা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে হবে। সবকটি ঘটনা তদন্ত করে দেখা হোক।’‌

আরও পড়ুন:‌ দুর্গাপুজোর সময় হতাশ হয়ে পড়লেন মৎস্যজীবীরা, ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে না জালে

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এইসব ঘটনা এখন ক্যাম্পাসের অন্দরে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, ‘‌আমরা উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ছাত্রী যে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন, সেই অধ্যাপককে সরিয়ে দিয়েছি। সাতজনের তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত চলছে। ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। গাজোল থানায় মৃত ছাত্রের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মালদার পুলিশ ক্যাম্পাসে এসেছিল। তাদের সহযোগিতা করেছি।’‌