বেহালা নতুন দলের মণ্ডপ। মণ্ডপের এখানে ওখানে ঝুলছে ফুচকা। মানে বাঙালির লোভনীয় ফুচকা একেবারে হাতের সামনে। হাত বাড়ালেই ফুচকা। প্রতিমাও যেন বড় ফুচকার মধ্যে। টকজলের হাঁড়িও আছে। বড় সাধ করে ফুচকা দিয়ে অলঙ্করণ করেছেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু সেটা যে এমন রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবে সেটা কে জানত?
সপ্তমীতে একেবারে জনজোয়ার। দলে দলে দর্শনার্থীরা আসছেন ফুচকার মণ্ডপ দর্শনে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে পরেই যে দৃশ্য সামনে আসছে তাতে টেনশনে রাতের ঘুম উধাও হওয়ার অবস্থা উদ্যোক্তাদের। দেখা যাচ্ছে বহু ক্ষেত্রেই কিছু ফুচকা উধাও। মানে দর্শনার্থীরা টপাটপ খেয়ে ফেলছেন এমনটা নয়। যেটা মনে করা হচ্ছে ঠাকুর দেখতে এসে তারা ফুচকা দেখে আর লোভ সামলাতে পারছেন না। অনেকেই প্রথমে দেখার চেষ্টা করছেন ফুচকাগুলি আসল নাকি নকল! এরপরই হয়তো তার থেকে কিছুটা হস্তগত করে ফেলছেন।
আসলে মণ্ডপের শরীর থেকে ফুচকা খুলে নিচ্ছেন দর্শনার্থীরা। লোভ সামলাতে না পেরেই প্রথমে হাত দিয়ে দেখছেন সেগুলি আসল কি না। এরপরই ফুচকা তুলে নিচ্ছেন তারা। আর ফুচকা তো এখানকার মণ্ডপসজ্জা। আর একটা ফুচকা তুলে নেওয়া মানেই মণ্ডপের সাজসজ্জা নষ্ট হয়ে যাওয়া।
এদিকে বেহালা নতুন দলের উদ্যোক্তারা এনিয়ে বার বারই দর্শনার্থীদের কাছে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু কে শুনছেন কার কথা! বহু বার দর্শকদের বলা হয়েছে দয়া করে ফুচকা তুলে নেবেন না। এদিকে এই ফুচকা খেলে সমস্যা হতে পারে। কারণে ফুচকা মণ্ডপের শরীরে বসানোর জন্য নানা কিছু ব্যবহার করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই ফুচকা না খাওয়াটাই শ্রেয়। এনিয়েও উদ্যোক্তারাও সতর্ক করেছেন দর্শনার্থীদের। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে নীচের দিকে থাকা ফুচকা ক্রমশ উধাও। এখনও অষ্টমী, নবমী, দশমী বাকি। ফুচকার মণ্ডপের অবস্থা কী হবে ভাবলেই শিউরে উঠছেন উদ্যোক্তারা।
আপাতত উদ্য়োক্তারা দর্শনার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কতটা সামাল দেওয়া যাবে সেটা নিয়ে মনের চাপ ক্রমশ বাড়ছে।
শিল্পী অয়ন সাহা এই ফুচকার মণ্ডপ তৈরি করেছেন। আসলে পারিবারিক ভাবনাকে তিনি এই ফুচকার মণ্ডপের মাধ্যমে রূপ দিতে চেয়েছেন। নাম রাখা হয়েছে তুষ্টি। শিল্পীর মতে, ফুচকা ছাড়া বাঙালি অসম্পূর্ণ। আর বাঙালি দুর্গাপুজো ছাড়া অসম্পূর্ণ।
তবে দর্শনার্থীদের একাংশের মতে, ফুচকা না থাকলে তো ফুচকার মণ্ডপও অসম্পূর্ণ।