গণপরিবহনশূন্য পুরান ঢাকা, মানুষের ভোগান্তি

রাজধানীতে দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মহাসমাবেশ আজ। নাশকতার শঙ্কায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে রেখেছে বাস মালিকেরা। যে গাড়িগুলো চলছে, সেগুলোতে ছিল যাত্রীদের অস্বাভাবিক চাপ। আর এ সুযোগে দ্বিগুণ-তিনগুণেরও বেশি ভাড়া হাঁকাচ্ছে সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলো। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পুরান ঢাকার অফিসগামী সাধারণ যাত্রীরা।

আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় দীর্ঘ সময় পর একটি বাস আসছে, আর সবাই হুড়োহুড়ি করে ওঠার চেষ্টা করছেন। পুরান ঢাকার প্রায় সব জায়গায় এমন চিত্র দেখা গেছে।

গণপরিবহন চালকরা বলছেন, মূলত নাশকতার শঙ্কা থেকেই সড়কে গণপরিবহন নিয়ে বের হচ্ছেন না তারা। ভিক্টোরিয়া ক্লাসিকের এক বাসচালক জানান, অধিকাংশ বাসচালক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ভাড়া নিয়ে আসছেন। অল্প কিছু গণপরিবহন চললেও যাত্রী আছে ধারণ ক্ষমতার দুই থেকে তিনগুণ। মূলত নাশকতার আশঙ্কা থেকেই বাস চলাচল সীমিত।

বাসের জন্য দীর্ঘ ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা জামাল উদ্দিন নামের একজন যাত্রী বলেন, দুই দলের সমাবেশে বিপদে পড়লাম আমরা। ৪০ মিনিট ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি, কোনও বাস পাচ্ছি না। এদিকে অফিসে যেতে লেট হলে বসের বকা শুনতে হবে। আবার বেতনও কেটে রেখে দেবে। রিকশা দিয়ে যাবো যে আমার কাছে সেই টাকাও নেই, শুধু বাস ভাড়া আছে। যে দলেরই সমাবেশ হোক ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে।

এদিকে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে পুরান ঢাকার সদরঘাট, বাবুবাজার, ধোলাইখাল মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চলছে পুলিশের তল্লাশি। গতকাল থেকেই সদরঘাটে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। সকাল ৭টা থেকেই বাবুবাজার ব্রিজের নিচে চেকপোস্ট বসিয়েছে কোতোয়ালি, বংশাল ও চকবাজার থানা পুলিশ। সকাল থেকে এ পর্যন্ত ২০ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, বাবুবাজার ব্রিজের নিচে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। মোবাইলও চেক করতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। এ সময় কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের পুলিশ হেফাজতে নিতে দেখা গেছে।

তল্লাশির বিষয়ে দায়িত্বরত কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মেহেদী হাসান বলেন, কাল রাত থেকেই সন্দেহভাজনদের তল্লাশি চলছে। কেউ যেন কোনও নাশকতা না করতে পারে সে জন্য এই তল্লাশি।