বনবিভাগেও একাধিক দুর্নীতি হয়েছে, জ্যোতিপ্রিয়কে ঘিরে অভিযোগ বিরোধীদের

টানা ২০ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশি চালানোর পর রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। বর্তমানে তিনি রাজ্যের বনমন্ত্রী। সেই বনদফতরেও একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এই অবস্থায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই এ বিষয়ে মন্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল উঠতে শুরু করেছে। বিরোধীদের বক্তব্য, তদন্ত হলে বনদফতরের একাধিক দুর্নীতি উঠে আসবে।

আরও পড়ুন: ফের চর্চায় শান্তিনিকেতন, কয়েক কোটির ‘দোতারা’ কেনেন জ্যোতিপ্রিয়, উঠল অভিযোগ

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বনমন্ত্রী হওয়ার পরেই বন বিভাগে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বনসৃজনের কাজ নিয়েও তৈরি হয় বিতর্ক। পাশাপাশি বিভিন্ন জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় গত দেড় বছরে বনদফতরের বিভিন্ন জমি একাধিক বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়। এছাড়াও জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে দফতরের নির্দেশ রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। 

এর আগে বনদফতরে বন সহায়ক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সেই সময় রাজ্যের বনমন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২০ সালে চুক্তিভিত্তিক পদে বন সহায়ক নিয়োগ করা হয়েছিল। এরপর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজীব বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। নির্বাচনের পরে আবার তিনি তৃণমূলে ফিরে আসেন। এই বন সহায়ক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গত মে মাসে প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। দুমাসের মধ্যে ইন্টারভিউ নিয়ে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। যদিও নতুন করে আবেদনপত্র জমা নেওয়া নিয়ে ফের দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা । এই অবস্থায় পুজোর পরে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগের কথা ছিল। এখন মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার ফলে স্বাভাবিকভাবে এই নিয়োগ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। 

অন্যদিকে, বর্তমানে বন দফতরের বেশ কয়টি প্রকল্পের কাজ চলছে। যারমধ্যে বন্যপ্রাণী এবং মানুষের সংঘাত এড়াতে উত্তরবঙ্গে মাস্টার প্ল্যান তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেই কাজ প্রায় শেষের দিকে। নতুন কেউ দায়িত্ব নিলে এই অবস্থায় কাজ সম্পূর্ণ হবে কিনা? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এছাড়া গণ্ডারের বিচরণভূমি হিসেবে উত্তরবঙ্গের রামসাইকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তা নিয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মৌলিক জমি হস্তান্তর করেছিলেন। সেই কাজও কীভাবে এগোবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, বিজেপি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে। সেই কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছে বনমন্ত্রীকে। অন্যদিকে, বিজেপির দাবি বনবিভাগে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। তদন্ত হলে সেই দুর্নীতিতে প্রকাশ্যে আসবে।