আমিন বাজার ল্যান্ডফিল আধুনিকীকরণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) ডিপিপি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নত বিশ্বের স্বপ্ন দেখছে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন নিশ্চিত হবে। বর্জ্য থেকে উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ। এর ফলে ফেলে দেওয়া বর্জ্য পরিণত হবে সম্পদে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব ও মানসম্মত উপায়ে বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন, নির্দিষ্ট নিরাপদ স্থানে বর্জ্য ডিস্পোজালের ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাজনিত কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাস হবে।’

প্রকল্প সম্পর্কিত তথ্য

আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। যার ১ হাজার ২৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা আসবে জিওবি থেকে বাকি ২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে।  প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।

প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো— বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের মাধ্যমে ভূমির উপর চাপ কমানো; পরিবেশ বান্ধব ও মানসম্মত উপায়ে বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন ও নিরাপদে নির্দিষ্ট স্থানে অপসারণের ব্যবস্থাকরণ; বর্জ্য হতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাসকরণ; বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করে সম্পদে রূপান্তর করার লক্ষ্যে ইনসেনারেশন প্লান্ট স্থাপন করা ও রির্সোস রিকভারি সুবিধা স্থাপনের মাধ্যমে ল্যান্ডফিলে বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে সম্পদে রূপান্তর করা।

প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রম হলো— ৮০ একর ভূমি অধিগ্রহণ; ৩০ একর ভূমিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইনসেনারেশন প্লান্ট স্থাপন; ৫০ একর ভূমিতে মেডিক্যাল বর্জ্য, ই-বর্জ্য ও ডেব্রিস ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ বান্ধব ল্যান্ডফিল স্থাপন; ভারী যান-যন্ত্রপাতি ক্রয় (হাইড্রোলিক এক্সকেভেটর— তিনটি, বুলডোজার, চেইনডোজার ছয়টি, লং আর্ম এক্সকেভটর দুটি); ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণ।

এই প্রকল্পের থেকে যেসব সুফল পাওয়া যাবে— ইনসিনারেশন প্লান্টে প্রতিদিন ৩ হাজার টন বর্জ্য পোড়ানোর মাধ্যমে ৪২ দশমিক ৫ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, যা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে;  বর্জ্য পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ফ্লাই অ্যাশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে সিমেন্টর র’ মেটরিয়ালস হিসেবে এবং বটম অ্যাশ রোড কনস্ট্রাকশন ম্যাটেরিয়ালস হিসেবে ব্যবহৃত হবে;  মাথাপিছু বর্জ্য ডিসপোজালের হার বৃদ্ধি ও সংশ্লিষ্ট রোগের মাত্রা হ্রাস; ল্যান্ডফিলের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও দুর্গন্ধের হার হ্রাস; ল্যান্ডফিলে লিচেট ও মিথেন গ্যাসের হার হ্রাস; মাটি, পানি ও বায়ূ দূষণের হার হ্রাস ও সর্বোপরি ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা।