নিজের গড়েই দলীয় কর্মসূচিতে নেই জ্যোতিপ্রিয়র ছবি, সময়ের সঙ্গে বদলাল দৃশ্য

সময় বদলালে ছবিও বদলে যায়। এবার সেটাই দেখা গেল মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রেও। সালটা ২০১১। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে বিপুলভাবে জিতে ক্ষমতায় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর তখন থেকেই পাড়ার বালু ক্ষমতাবান হয়ে উঠল মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হিসাবে। আর তখন থেকেই উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমায় তৃণমূল কংগ্রেসের সব কর্মসূচিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ছবি দেখা যেত। অন্য নেতাদের সঙ্গে জ্বলজ্বল করত তাঁর ছবিও। কিন্তু সম্প্রতি ইডি তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তুলেছে রেশন দুর্নীতির অভিযোগ। যদিও এখনও আদালতে তা প্রমাণিত হয়নি। তবে এই ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেসের বাগদা পূর্ব ব্লকের বিজয়া সম্মেলনের ব্যানার ও ফ্লেক্সে দেখা গেল না বনমন্ত্রীর ছবি।

গতকাল বুধবার যে ব্যানার–ফ্লেক্স দেখতে পেল আমজনতা সেখানে ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। জ্যোতিপ্রিয়ের ছবি তাঁদের সঙ্গে দেখা গেল না। বরং দেখা গেল, তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের ছবি। যিনি বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, দুর্নীতি প্রমাণ করতে না পারা পর্যন্ত দল বনমন্ত্রীর পাশেই থাকবে। অথচ উত্তর ২৪ পরগনার যে জোনে কিছুদিন আগেও জ্যোতিপ্রিয়র প্রভাব ছিল এককাট্টা, সেখানে দলীয় কর্মসূচিতে তাঁর ছবি বাদ পড়ল!‌ দল এবার কি তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে? উঠেছে প্রশ্ন।

বিধানসভায় পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। এই পাশে থাকা ততদিনই যতদিন না দুর্নীতির অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। এই আবহে মন্ত্রীর ছবি তাঁর গড়েই হারিয়ে যাওয়ায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস সেসব গুঞ্জনে কান দিতে নারাজ। বাগদায় অনুষ্ঠিত বিজয়া সম্মেলনে মমতা ঠাকুরদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বজিৎ দাসও। জ্যোতিপ্রিয়র ছবি না থাকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘দলের নির্দেশই আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না।’ এই বলে তিনি গুঞ্জনে জল ঢাললেন।

আরও পড়ুন:‌ সজোরে মোটরবাইক–টোটোয় ধাক্কা মারল অ্যাম্বুলেন্স, কোচবিহারে পথ দুর্ঘটনায় মৃত মা–মেয়ে

তাহলে আপনার ছবি ছিল কেন? এই প্রশ্নও করা হয় বিশ্বজিৎ দাসকে। তিনি আগে তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। তারপর বিজেপিতে গিয়েছিলেন। আবার ফিরেছেন পুরনো দলেই। এই বিষয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘স্থানীয় বিধায়ক হিসাবে কর্মীরা হয়তো আমার ছবি দিয়ে দিয়েছে। নয়াদিল্লিতে আমরা গরিব মানুষের বকেয়া টাকার দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে বিজেপি বালুদাকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করেছে। দল বালুদার পাশে আছে।’ পাশে থেকেও কি নিরাপদ দূরত্ব রাখা হচ্ছে?‌ উঠেছে প্রশ্ন।