আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির বৈঠক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি জানানোসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে বসছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।

শনিবার (৪ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকালে ও বিকালে দুই ভাগে ২২টি করে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে এতে অংশ নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সকালে আওয়ামী লীগসহ ২২টি এবং বিকালে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ২২ দল রয়েছে; যাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা দলের দুই জন মনোনীত প্রতিনিধি থাকতে পারবেন। অবশ্য বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দিচ্ছে না। দলগুলো ইসির আগের সংলাপগুলোও বর্জন করেছিল।

ভোট নিয়ে বিবদমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে সহিংসতাও শুরু হয়েছে। মতভেদ নিরসনে সংলাপের তাগিদ এসেছে দলসহ বিভিন্ন মহল থেকে; কূটনৈতিক মহলেও চলছে দৌড়ঝাঁপ।

বিএনপি মহাসচিবসহ বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। আগের মতো ইসির আমন্ত্রণে বিএনপি ও সমমনাদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় অফিস বন্ধ থাকায় এবার ইসির চিঠিও নিতে পারেনি দলটি।

২৮ অক্টোবরের সংঘাতের পর মহাসমাবেশ পণ্ডের দিন থেকে অনলাইন মাধ্যমে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটা (ইসির চিঠি) কিসের সংলাপ? কার জন্য সংলাপ। দলের শীর্ষ নেতাদের বন্দি করে, বাড়ি ছাড়া করে, ঘর ছাড়া করে ওরা কিসের সংলাপ করতে চায়। …সরকারের নির্দেশে এই তামাশাগুলো করা হচ্ছে, উপহাসগুলো করা হচ্ছে, ঠাট্টা-ইয়ার্কি করা হচ্ছে সংলাপের নামে (নির্বাচন কমিশন)।’

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকায় তারা (বিএনপি) যে রক্তপাত, তাণ্ডব ঘটিয়েছে এটা তারই প্রমাণ। এরপর এই সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা, তারা সংলাপ করলে এটা তাদের বিষয়।

ইসি বৈঠকে যা জানবে, জানাবে

দলগুলোকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে, একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদপূর্তির কারণে আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

‘নির্বাচনের মূল অংশীজন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পূর্ব প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে ৪ নভেম্বর এক আলোচনা সভার অয়োজন করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এ সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত থাকবেন।’

‘নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে এ সভায় আপনার দলের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা আপনাদের মনোনীত ২ জন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন অনুরোধ জানিয়েছেন।’

এবারও সাড়া দেবে কি দল?

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা সংলাপে বিএনপিসহ কয়েকটি দল অংশ নেয়নি। সে কারণে বিএনপি ও সমমনা দল এবং সিপিবি, বাসদসহ সংলাপ বর্জন করা ৯ দলকে গত মার্চে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাতেও সাড়া দেয়নি দলগুলো।

এ পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ সমমনারা ইসির ডাকে সাড়া দেবে কিনা জানতে চাইলে কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

সকালে বিকালে যেসব দল আমন্ত্রিত

সকাল সাড়ে ১০টায় নির্বাচন ভবনে ইসির সম্মেলন কক্ষে আমিন্ত্রত ২২ দলের মধ্যে রয়েছে- আওয়ামী লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, এলডিপি, তৃনমূল বিএনপি, এনডিএম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিজেপি, সিপিবি, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ, এনপিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণতন্ত্রী পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, খেলাফত মজলিশ, বিএমএল, বিএনএফ, গণফ্রন্ট ও ইনসানিয়ত বিপ্লব বাংলাদেশ।

বিকাল সাড়ে ৩টায় বিএনপি, জেপি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জেএসডি, জাকের পার্টি, বাসদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, মুক্তিজোট, বাংলাদেশ জাসদ ও বিএনএম।