Jyotipriya Mullick: দিয়েছিলেন ২০ লক্ষ টাকা, বিহারী পরিচারককে সরকারি চাকরিও করে দিয়েছিলেন বালু

নিজেকে যতই নির্দোষ বলে দাবি করুন রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ফাঁড়া এখুনি কাটার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাসের পর এবার মুখ খুললেন মন্ত্রীর বাড়ির পরিচারক রামস্বরূপ শর্মা। বিহারের বাসিন্দা রামস্বরূপের দাবি, সাহেবের কল্যাণেই ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে কেষ্টপুরের প্রফুল্লকাননে ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি।

ইতিমধ্যে ইডির জেরার মুখে পড়েছেন রামস্বরূপ। সেখানে যাবতীয় সত্যি উগরে দিয়ে এসেছেন তিনি। ষষ্ঠ শ্রেণি পাশ করে পেটের তাগিতে ১৯৯৩ সালে চলে আসেন কলকাতায়। এক আত্মীয়ের সাহায্যে কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাথে নরসুন্দরবৃত্তি শুরু করেন। পাশেই জ্যোতিপ্রিয়র পুরনো বাড়ি। সেই সূত্রে পরিচয় হয় তাঁর সঙ্গে। তখন যদিও মন্ত্রী নন জ্যোতিপ্রিয়। এর পর বালুদার নির্দেশে প্রয়োজন মতো বাজার থেকে কলাটা – মুলোটা পৌঁছে দিতেন রামস্বরূপ। ক্রমে তাঁর ওপর আস্থা বাড়তে থাকে ‘সাহেব’এর। এর পর তাঁকে পরিচারক হিসাবে নিয়োগ করেন বালু। সেই থেকে বালুর আর্মহাস্ট স্ট্রিটের বাড়িতে পরিচারক হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন রামস্বরূপ।

এর মধ্যে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসে। খাদ্যমন্ত্রী হন জ্যোতিপ্রিয়। কপাল খুলে যায় রামস্বরূপের। ২০১৩ সালে তাঁকে কৃষি দফতরে চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ ডি কর্মী হিসাবে নিয়োগ পাইয়ে দেন জ্যোতিপ্রিয়। এর পর তাঁকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ২০ লক্ষ টাকা দেন বালু। সেই টাকা দিয়ে কেষ্টপুরের প্রফুল্লকাননে একটি ২ কামরার ফ্ল্যাট কেনেন রামস্বরূপ। বিহার থেকে গোটা পরিবারকে কলকাতায় নিয়ে আসেন তিনি। তবে রামস্বরূপ ইডিকে জানিয়েছেন, বালুর কাছ থেকে ওই টাকা ধার হিসাবে নিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে অনেকটা টাকা শোধও করে দিয়েছেন।

তবে বালুর ভুয়ো সংস্থার যে তিনি ডিরেক্টর তা জানা ছিল না রামস্বরূপের। তিনি বলেন, ‘আমি ওসব কিছু জানি না। সাহেবের লোকেরা এসে আমাকে কয়েকটা কাগজে সই করে দিতে বলেছিল, আমি চোখ বুঁজে সই করে দিয়েছি। কোম্পানি কাকে বলে, ডিরেক্টর কী এসব কিছুই আমি জানি না।

রামস্বরূপের এই বয়ানের ফলে জ্যোতিপ্রিয়র বিপদ আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। কী ভাবে নিজের প্রভাব অপব্যবহার করে জ্যোতিপ্রিয় দুর্নীতির টাকা সরিয়েছেন তা পরিচারকের কথাতেই স্পষ্ট বলে দাবি করছেন ইডির তদন্তকারীরা।