Mahua Moitra Cash for Query Case Update: ‘মোদী-আদানি কত ভয় পায় আমাকে’, এথিক্স কমিটির বৈঠক পিছোনো নিয়ে বিস্ফোরক মহুয়া

মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসতে চলেছে সংসদের এথিক্স কমিটি। এর আগে জানা গিয়েছিল, মঙ্গলবারই হবে এথিক্স কমিটির বৈঠক। তবে তা পরে পিছিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে এবার নয়া অভিযোগ করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে মহুয়া দাবি করেন, ৯ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার কমিটিতে থাকা এক কংগ্রেস সাংসদের মনোয়ন জমা দেওয়ার দিন। এই আবহে যাতে তাঁর পক্ষে কমিটির সদস্য সংখ্যা কম থাকে, সেই ছক কষেই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে কমিটির বৈঠক। (আরও পড়ুন: ২০১৪’র টেট পরীক্ষার্থীদের মাথায় হাত, জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে স্থগিতাদেশ SC-র)

সোশ্যাল মিডিয়া পল্যাটফর্ম এক্স-এ আজ মহুয়া লেখেন, ‘এথিক্স কমিটির রিপোর্টের একটি খসড়া কপি সব সদস্যকে দেওয়াই রীতি। তবে এই ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। একেবারে ৯ নভেম্বর নাকি সেই রিপোর্ট গৃহীত হবে। এই বৈঠক পিছিয়ে ৯ নভেম্বর ডাকা হয়েছে কারণ সেদিনই কংগ্রেস সাংসদের মনোয়ন পেশের দিন। এই আবহে তিনি সেদিন কমিটির বৈঠকে আসতে পারবেন না। কমিটিতে যাতে আমার পক্ষের লোকজন কম থাকে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। চার্টার্ড বিমানে করে মধ্যপ্রদেশ বিজেপির সভাপতিকে আনানো হচ্ছে। আদানি এবং মোদী কত ভায় পায় আমাকে!’

উল্লেখ্য, এর আগে সিবিআই-এর কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন’ করার মামলায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহদরাই এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এদিকে এই বিতর্ক নিয়ে হলফনামা দিয়েছেন শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানি। তাতে আরও চাপে পড়েছেন মহুয়া মৈত্র। হলফনামায় হিরানন্দানি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম করতে আদানি গ্রুপকে নিশানা করেছিলেন মহুয়া। আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য নাকি হিরানন্দানিকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামা অনুযায়ী, দর্শন হিরানন্দানির দাবি, আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। পরিবর্তে তাঁর থেকে মহুয়া বিলাসবহুল জিনিসপত্র নিতেন। হিরানন্দানি দাবি করেছেন, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করার পথ বেছে নেন মহুয়া। কিন্তু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে নীতি সংক্রান্ত বিষয়, প্রশাসনিক বিষয়ে মোদীকে আক্রমণের সুযোগ পাননি মহুয়া। সেজন্য আদানি গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহুয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণের পন্থা বেছে নেন।

হিরানন্দানি দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মহুয়ার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁর। সেইসময় বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। ২০১৯ সালে সাংসদ হন মহুয়া। সেই সময় ব্যবসায়িক ‘দ্বন্দ্ব’ চলছিল আদানি এবং হিরানন্দনিদের মধ্যে। দর্শনের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি না করে আদানি গোষ্ঠীর ধর্মা এলএনজির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। এই আবহে আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্নমালা তৈরি কে দেওয়ার জন্য দর্শনকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহুয়া। এর জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামায় দাবি কর হয়, ক্রমেই মহুয়ার সঙ্গে হিরানন্দনির সম্পর্ক ভালো হতে থাকে। পরে তাঁর থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করতে থাকেন মহুয়া। তাঁর ওপর নাকি মহুয়া চাপও সৃষ্টি করেছিলেন। এই আবহে মহুয়ার কথা মতো চলতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হওয়ায় তিনি নিজে থেকেই মুখ খুলেছেন বলে দাবি করেছেন হিরানন্দানি। এখন সংসদীয় এথিক্স কমিটি মহুয়ার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার বিষয়।