Ration Scam Latest Update: খোলা বাজারে বিক্রি হয়েছে বাংলার গরিব মানুষের ৩০% রেশন, দাবি করল ইডি

পশ্চিমবঙ্গে চালু থাকা তিনটি রেশন প্রকল্পের ৩০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য বেআইনি ভাবে খোলা বাজারে বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করল ইডি। রাজ্যে আপাতত দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষের জন্য চালু রয়েছে একটি রেশন প্রকল্প। তাছাড়া রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা এবং অন্নপূর্ণা অন্ত্যোদয় যোজনাতেও রেশন বিলি করা হয় বাংলায়। এই আবহে মঙ্গলবার ইডি একটি বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, এই তিন প্রকল্পের ৩০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য খোলা বাজারে বিক্রি হয়েছে। সেই দুর্নীতির টাকা ঢুকেছে চালকল মালিক ও রেশন ডিলারদের একাংশের পকেটে। এদিকে ইডির আরও দাবি, সরকার যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনে, তা নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে বাংলায়। (আরও পড়ুন: অনুমোদনই মেলেনি, তার আগেই ৫ বছরের জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ঘোষণা মোদীর)

ইডি জানিয়েছে, রেশন দুর্নীতির তদন্তে মোট ১৮ কোটি ২০ লক্ষ টাকার খোঁজ পেয়েছে তারা। এর মধ্যে প্রায় ১৭ কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে খোলা ভুয়ো সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মেসার্স এজে অ্য়াগ্রোটেক এবং মেসার্স এজে রয়্যাল প্রাইভেট লিমিটেড নামে দুটি পার্টনারশিপ কোম্পানির অ্যাকাউন্টে থাকা ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এছাড়া আরও একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে ইডি।

আরও পড়ুন: ‘ক্ষমা চাইছি’, যৌন সঙ্গমের সময় বীর্যপাত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ‘ফেরালেন’ নীতীশ

জানা গিয়েছে, এর আগে বাকিবুরকে যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল এবং তাঁর শ্যালকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে যে নথি উদ্ধার হয়েছিল, তার ভিত্তিতে প্রশ্নমালা তৈরি করে জেরা করা হচ্ছে বালুকে। আর মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও যে সব তথ্য সামনে আসছে, তার ভিত্তিতে আরও অনেক জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। এই আবহে গত শনিবারই উলুবেড়িয়া, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক চালকল, আটাকলে তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। সেদিনই অঙ্কিতের অফিসে হানা দেয় ইডি। এই সংস্থার মালিক অঙ্কিত চন্দ্র জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। আবার হিতেশ নামক এক ব্যক্তির বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের পশু খাদ্য কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েছিল এই হিতেশের আত্মীয় দীপেশ।

এদিকে ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সল্টলেকের একটি বাড়িতে জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুরের বৈঠক হত। ইডির তথ্য অনুযায়ী, বৈঠক হওয়া বাড়িটা একজন প্রোমোটারের। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কনভয় সেখানে আসত। ওখানে বাকিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক চলত। খাদ্য ভবন থেকে বেরিয়ে কনভয় করে ওই বাড়িতেই আসতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গোটা বাড়িতেই ছিল সিসিটিভি। ইডি আরও দাবি করেছে, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের ১২ হাজারেরও বেশি ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর, রেশন দোকানের মালিকের নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছিল। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই এক দশকে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ইডির। আর তদন্তকারীরা বলছেন, এই গোটা নেটওয়ার্কের মাস্টারমাইন্ড নাকি মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজেই। ইডির বক্তব্য, যে পরিমাণের দুর্নীতি হয়েছে, তা খাদ্য দফতরের মদত ছাড়া করা অসম্ভব।