Dhanteras: ধনতেরাসে ঝাঁটা কেনা কি পুরোটাই কুসংস্কার? না কি রয়েছে কোনও বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা

বঙ্গজীবনের নতুন পরব ধনতেরাসে ঝাঁটা কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাঙালি। হাটে – বাজারে মায় পাড়ার দোকানে পসরা সাজিয়ে বিক্রি হচ্ছে ঝাঁটা। দর দাম করে তা থেকে পছন্দেরটা বেছে নিচ্ছেন গৃহিনী। কিন্তু ধনতেরাসে ঝাঁটা কেনা কি কুসংস্কার? না কি প্রথার প্রচ্ছন্নে রয়েছে কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা? খোঁজ করল হিন্দুস্তান টাইমস।

মূলত গোবলয়ের অনুষ্ঠান ধনতেরাসের আসল মানে হল ধন ত্রয়োদশী। পুরাণে কথিত রয়েছে এই তিথিতেই জন্মেছিলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের আদিপুরুষ ও তথা দেববৈদ্য ধন্বন্তরী। শুধু তাই নয়, সমুদ্র মন্থনের সময় তাঁর হাতেই উঠে এসেছিল অমৃতভাণ্ড। যা পান করে অমর হয়েছিলেন দেবতারা। তাই ধন্বন্তরীর জন্মদিনকে পালনের মাধ্যমে দীর্ঘায়ু লাভের প্রার্থনা করেন অনেকে। আর দীর্ঘায়ু লাভের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত পরিচ্ছন্নতা। এই দিন বাসস্থান ও তার আসপাশ পরিষ্কার রাখার শপথ হিসাবে ঝাঁটা কেনার প্রথা তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়।

এতো গেল ধন্বন্তরির কথা। এছাড়া আবর্জনাকে সনাতন সভ্যতায় মনে করা হয় অলক্ষ্মী। তাই যা অলক্ষ্মীকে বিদায় করতে ঝাঁটার আগায় লক্ষ্মী বাস করে মৎস্যপুরাণে উল্লেখ করেছেন মুনি ঋষিরা। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অলক্ষ্মী বিদায়ের পুজো করে থাকেন সনাতনীরা। তার আগে ঘর বাড়ি পরিচ্ছন্ন করতে লক্ষ্মীর প্রতীক হিসাবে ঝাঁটা কেনেন তারা। আর্দ্র বর্ষাকালের শেষে শীতের শুরুতে বাড়ির যাবতীয় জঞ্জাল কিছুটা শুকিয়ে আসে। যার ফলে এই সময় জঞ্জাল অপসারণ করলে জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা কম থাকে।

এ ছাড়াও রয়েছে এক লৌকিক ব্যাখ্যা। লঙ্কায় রাবন বধ করে দীপাবলিতে অযোধ্যায় ফিরেছিলেন রামচন্দ্র। রামের লঙ্কাজয়ের খবরও অযোধ্যায় পৌঁছেছিল সেই দিনই। তার পর থেকেই দীপাবলি উৎসব পালনের সূচনা হয়। সেই দিনটি পালনের প্রস্তুতি হিসাবে অযোধ্যাসহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ বাড়ি থেকে যাবতীয় আবর্জনা ফেলে দিয়ে বাড়ি রং করান ও নতুন রূপ দেন। তার পর দীপাবলির সন্ধ্যায় আলোর মালায় সাজান বাড়িতে। ধনতেরাসেই শুরু হয় দীপাবলির জন্য বাড়ি পরিষ্কারের তোড়জোড়। তাই কেনা হয় ঝাঁটা।

অর্থাৎ ধনতেরাসে ঝাঁটা কেনার প্রথা কেবলই কুসংস্কার নয়। এর পিছনে রয়েছে একাধিক লৌকিক ও বিজ্ঞানসম্মত কারণ।