২০১০ সালে কনজারভেটিভ পার্টিকে ক্ষমতায় আনার নায়ক ছিলেন ডেভিড ক্যামেরন। ২০১০ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন মাত্র ৪৩ বছর বয়সে। তাকে অভিহিত করা হয় ব্রিটেনের অন্যতম সফল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। তিনি এমপি না থাকায় সরকারে আনা কঠিন হওয়ায় তাকে হাউজ অব লডর্সের সদস্য করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে। বিশ্বজুড়ে যেমন পরিচিতি রয়েছে তেমনি তিনি অপেক্ষাকৃত বিতর্কহীন একজন নেতা। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে সরকার পরিচালনার।
তিনি ছয় বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ব্রেক্সিট গণভোটে রিমেইন প্রচারাভিযানকে সমর্থন করেছিলেন এবং লিভ জিতে গেলে পদত্যাগ করে সরে যান পর্দার অন্তরালে।
ইউরোপের রাজনীতিতে এখন কট্টর দক্ষিণপন্থি রাজনীতির জয়জয়কার। সেই বাস্তবতায় কনজারভেটিভের ভোট যাতে নাইজেল ফারাজদের ইউকিপের মতো দলের বাক্সে না যায় সে জন্য দলটির থিংকট্যাংক তৎপর রয়েছে।
ব্রিটেনের সর্বশেষ জনমত জরিপে আসন্ন নির্বাচনে কনজারভেটিভের ভরাডুবির পূর্বাভাস স্পষ্ট। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে ডেভিড ক্যামেরনকে ফিরিয়ে এনে পরিস্থিতি কতটা সামাল দিতে পারে কনজারভেটিভ, সেটিই এখন দেখার বিষয়। আসন্ন নির্বাচনের আগে ক্যামেরন দলটির ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে।
ব্রিটেনের সমকালীন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নুরুর রহিম নোমান সোমবার (১৩ নভেম্বর) এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘লেবার কনজারভেটিভের মতো বড় দলগুলোর ভেতরে অপ্রকাশ্য থিংকট্যাংক আছে। দলের কৌশল নির্ধারণে সময়ে সময়ে তারা অনেককে পেছন থেকে সামনে আনে। ডেভিড ক্যামেরন কনজারভেটিভের এই কঠিন সময়ে যুদ্ধ-সংকুল বিশ্ব রাজনীতিতে ফরেন সেক্রেটারি হিসেবে কী ভূমিকা রাখেন সেটি দেখার বিষয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৩ জুন ব্রিটিশরা ব্রেক্সিটের পক্ষে গণভোট দিয়েছিল। এখন পুরো দেশের মানুষের ভাবনা পাল্টে গেছে। পাশাপাশি, ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও জনপ্রিয় লোকরঞ্জনবাদী, অভিবাসন বিদ্বেষী প্রবল ডানপন্থি ধারার উত্থান ঘটেছে।
স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ব্রিটেনের অভ্যুদয় হয় ১৭০৭ সালের ১ মে। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন নামের রাষ্ট্রসংঘে যোগ দেয় ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার আগে ২৬৬ বছর ব্রিটেন স্বাধীন ও এককভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত হয়েছে। তারপরও ব্রেক্সিটের দীর্ঘমেয়াদি ফলাফলজনিত নানা জটিলতা, মুদ্রাস্ফীতিসহ নানা সংকটে নাকাল এখন ব্রিটিশ অর্থনীতি। সেই সময়ে ডেভিড ক্যামরন কি আদৌ কোনও চমক দেখাতে পারবেন, সে অপেক্ষায় দল ও দলের বাইরে থাকা তার বহু সমর্থক।