ভাইফোঁটা নিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, প্রতিপদে চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে

চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে গিয়ে ভাইফোঁটা নিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। উৎসব–পার্বণেও এখানে বসে ধরনা দিচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। শীত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষাতেও ধর্মতলার গাছের তলায় তাঁদের দেখা মিলেছিল। সেখানেই এবার আয়োজন করা হল ভাইফোঁটার। আর আজ, মঙ্গলবার ধর্মতলায় চাকরিপ্রার্থীদের হাতে ফোঁটা নেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রাজনৈতিক দিক থেকে এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রী এখন জেলে গিয়েছেন। সেখানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের ভাইফোঁটা নেওয়াকে অনেকে রাজনৈতিক চাল বলে দেখছেন।

এদিকে ৯৭৫ দিনে পড়েছে এসএলএসটি ২০১৬ নবম–দশমের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের ধরনা–অবস্থান–আন্দোলন। রাজ্যে যখন বারো মাসে তেরো পার্বণ চলছে তখন তাঁরা রাস্তাতেই দিন কাটাচ্ছেন। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। আজ, মঙ্গলবার এই ধরনা মঞ্চেই ভাইফোঁটা পালন করা হয়। চাকরিপ্রার্থী মেয়েরা ভাইফোঁটা দেন। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে জোরকদমে চলে ভাইফোঁটা পালন। নিজেদের মধ্যে অনুষ্ঠানটি পালন করেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেখানেই বিকেলবেলায় যান মহম্মদ সেলিম। তাঁকেও ভাইফোঁটা দেন কয়েকজন মহিলা চাকরিপ্রার্থী। একই মঞ্চে দেখা যায় কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়কেও। তিনিও ভাইফোঁটা নেন এবং বোনেদের চাকরির দাবিতে পাশে থাকার কথা দেন।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধর্মতলায় এই আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। এই চাকরির বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে চাপে ফেলার কৌশল নেওয়া হচ্ছে। যদিও রাজ্য সরকার চাইছে, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ হোক। কিন্তু আদালতের নির্দেশ না মেলা পর্যন্ত তা করা যাচ্ছে না। চাকরির দাবিকে সামনে রেখে ভাইফোঁটার আয়োজন করেন চাকরিপ্রার্থী মহিলারা। সেখানে মহিলারা শঙ্খ বাজিয়ে, উলু দিয়ে এই অনুষ্ঠান পালন করেন। এই আন্দোলনে সবাই সহযোদ্ধা সেটা বোঝাতেই ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়। এই ভাইফোঁটা নেওয়ার বিষয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‌উৎসবের দিনগুলিতে আমি ওদের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করি। আদালতের বাইরেও আমরা দ্রুত নিয়োগের জন্য লড়াই করছি।’‌

আরও পড়ুন:‌ বড়মার মন্দিরে ভক্তিভরে পুজো দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আরতি করলেন নিজে

এছাড়া এসএলএসটি চাকরির জন্য ২০১৬ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে যে চাকরি দেওয়া হয়েছিল তাতে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। মামলা করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের। সেই চাকরি পান ববিতা সরকার। যদিও পরে তাঁর চাকরিও বাতিল হয়। সেটি পান আর একজন। কলকাতা হাইকোর্টে এখনও এসএলএসটি মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। আর চাকরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা।