Jail Life: ওয়ার্ডে থাকতে দিন! একলা সেলে গা ছমছম করছে, ভীষণ একাকিত্ব জেলবন্দি বাংলার ‘মহান’ নেতাদের

‘আমি মরে যাব।’ একগাল খোঁচা খোঁচা দাড়ি। নুয়ে পড়া কোমর। আদালত চত্বরে কিংবা হাসপাতাল চত্বরে অনেকেই মেলাতে পারছিলেন আগের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। খুব কাছ থেকে যারা দেখেছেন তাকে এতদিন, তারা বিলক্ষণ জানেন কতটা সৌখিন জীবন যাপন করতেন তিনি। একেবারে রাজকীয় মেজাজ। কিন্তু ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে চেহারায় একেবারে লক্ষণীয় পরিবর্তন। 

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এসএসসি দুর্নীতিতে ধরা পড়েছেন তিনি। দুর্গাপুজো, কালীপুজো দুটোই কেটে গেল জেলে। একলা, নিঃসঙ্গ। বান্ধবী অর্পিতাও অন্য জেলে বন্দি। সব কেমন ওলটপালট হয়ে গিয়েছে।

তবে কিছুদিন আগেও সভা সমিতিতে তারাই থাকতেন মধ্যমণি।এলাকায় এলে তাদের দাপটে তটস্থ হয়ে থাকত লোকজন। মঞ্চ থেকে মহান, কর্মবীর নানা বিশেষণে ভূষিত হতেন তারা। আর এখন আদালত চত্বরে শুনতে হয় চোর চোর ডাক।

আগে বার বার সেলাম ঠুকতেন পদস্থ কর্তারা। কিন্তু সেসব অতীত। একটা একটা করে দিন কাটছে জেলের গরাদের আড়ালে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রথম কয়েকদিন খুব কষ্ট হয়। তারপর ধীরে ধীরে কেমন গা সওয়া হয়ে যায়। কিন্তু এই গা সওয়াটা যেন কিছুতেই হচ্ছে না প্রভাবশালীদের একাংশের। একাধিক নেতা মন্ত্রী, প্রাক্তন পদস্থ কর্তারা জেলবন্দি।  

সেলের মধ্য়ে আলো বাতাস আসার খুপড়ি। সেখানেই বন্দি জীবন। সেখানেই দিন রাতের বেশির ভাগ সময় কেটে যায়। চারপাশের সেই মানুষগুলো বেমালুম উধাও। রাতদিন ওই ঘরে পায়চারি। একটু বই , খবর কাগজ পড়া। আবার চুপটি করে শুয়ে থাকা। মনের কথা বলার মতো মানুষও নেই।

তবে পরিবারের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের একাংশের পরিবারের তরফে এনিয়েও বিশেষ উৎসাহ নেই বলে খবর।  আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুসারে খবর। 

সূত্রের খবর, সেই প্রভাবশালীরাই এবার চাইছেন একটু সঙ্গ, কথা বলার মতো মানুষ। ভয়াবহ একাকীত্ব চেপে বসছে। বাতি লাগানো গাড়ি নেই, নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই,এটা কোথায় থাকতে হচ্ছে? সূত্রের খবর, বিভিন্ন মামলায় একাধিক তথাকথিত প্রভাবশালীর দিন কাটছে জেলের অন্দরে। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য তাদের সেলে রাখা হচ্ছে। আর তাদের একাংশ এবার চাইছেন ওয়ার্ডে সবার কাছে যেতে। অন্তত কথা বলার দুটো মানুষ পাওয়া যাবে। কিন্তু নিরাপত্তার অভাব হতে পারে সেকারণেই প্রভাবশালীদের ওয়ার্ডে রাখার ঝুঁকি নিতে চাইছে না জেল কর্তৃপক্ষও।