যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার বিরুদ্ধে, কলেজ স্ট্রিটে অবরোধ

আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ডেকে পাঠিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে আজ অভিযোগ তুলল তাঁর পরিবার। এমনকী এই ঘটনার জেরে সন্ধ্যা থেকে গোটা কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, চুরির মোবাইল কিনেছিল ওই যুবক। এই অভিযোগে যুবককে ডেকে পাঠানো হয় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায়। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। আর তাতেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার। মারধরের পর রক্তাক্ত অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজে যুবককে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের নাম অশোক সাউ (‌৪২)‌। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।

পরিবার সূত্রে খবর, ওই যুবক পেশায় ব্যবসায়াী। তাঁর নাম অশোক সাউ। থানা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করার পর রাখা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি কলুটোলা লেনে। তাঁর ভাইপো বিজয় সাউ অভিযোগ করেছেন, তাঁর কাকার পানের দোকান আছে। তাঁকে বুধবার দুপুরে হঠাৎ আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা ডেকে পাঠায়। দেখা করতে বলা হয় থানায়। তাই কাকা থানায় যান। কিন্তু পরে তাঁরা খবর পান থানায় অশোক সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে। বিজয় সাউয়ের দাবি, ‘‌একটা মোবাইল কেনাকে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগ এসেছিল। থানা থেকে ফোন করা হয়। থানায় ডেকে পাঠানো হয়। থানায় মোবাইল জমা করতে কাকা গিয়েছিল। ওকে পাঁচজন পুলিশ মিলে মেরেছে। আমি ঢুকে দেখি, কাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। নাক–মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল।’‌

এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তে থানায় গিয়ে পরিবারের সদস্যরা দেখেন, মৃত অবস্থায় পড়ে আছে অশোক সাউ। শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে সেটা ফেসবুক লাইভ করা হয়। পরিবারের সদস্যরা সেখানে অভিযোগ করেন, থানায় ডেকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে অশোক সাউকে। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পৌঁছেছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার। বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও পরিবারের বিক্ষুব্ধ সদস্যরা কোনও কথা শুনতে চাইছেন না। শুধু বলছেন, ‘‌এবার আইন নিজেদের হাতে তুলে নেব।’‌

আরও পড়ুন:‌ মদের টাকা চাই, নিজের নাবালিকা মেয়েকে বাবা বিক্রি করল প্রোমোটারের কাছে, তারপর কী ঘটল?‌

এখন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কলেজ স্ট্রিট চত্বর অবরোধ করেন মৃত ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যরা। পানের দোকানের মালিক অশোককে চুরি যাওয়া মোবাইল বেআইনি পথে কেনার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন ডিসি সেন্ট্রাল দীনেশ কুমার। ডিসি সেন্ট্রাল তাঁদের আশ্বস্ত করেন, ‘‌সব থানায় সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। তদন্ত করে দেখা হবে।’‌ তাতে অবশ্য বিক্ষোভ ওঠেনি। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। বিজেপি নেতৃত্ব ঘটনাস্থলে পৌঁছবেন বলে জানিয়েছেন।