দুদক আইনের ২৭ ধারায় সাধারণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা চলতে পারে না: হাইকোর্ট

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ২৭(১) ধারায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া সাধারণ কোনও ব্যক্তির (প্রাইভেট পার্সন) বিরুদ্ধে মামলা চলতে পারে না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ময়মনসিংহের মমতাজ বেগম নামে এক গৃহিনীর তিন বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্ট তাকে খালাস দিয়েছেন।

রবিবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণসহ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম বায়েজিদ। 

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ২৭(১) ধারায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া সাধারণ কোনও ব্যক্তির (প্রাইভেট পার্সন) বিরুদ্ধে মামলা চলতে পারে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত না থাকলে কোনও সাধারণ ব্যক্তির পক্ষে দুর্নীতি করা সম্ভব না।

২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি তার নিজ নামে বা তার পক্ষে অন্য কোনও ব্যক্তির নামে, এমন কোনও স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির দখলে রয়েছে বা মালিকানা অর্জন করেছেন, যা অসাধু উপায়ে অর্জিত হয়েছে এবং তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে এবং তিনি ওই সম্পত্তি দখল সম্পর্কে আদালতের কাছে বিচারে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হলে ওই ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) বছর এবং অন্যূন ৩ (তিন) বছর পর্যন্ত যেকোনও মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং তদুপরি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন এবং ওই সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত যোগ্য হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১১ সালের ২৪ মে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে মোমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, মিসেস মমতাজ বেগম (৪৮) দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা সম্পদের তথ্য গোপনসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

ওই মামলায় গৃহিণী মোমতাজ বেগমকে তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১। ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারায় তিন বছরের সাজার পাশাপাশি তাকে জরিমানা করা হয়।

পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মোমতাজ বেগম। সে আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।