নবান্নকে আবাস যোজনার বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্রের চিঠি, তলব অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের। আর তা নিয়েই কেন্দ্র–রাজ্য সংঘাত চরমে উঠেছে। এই আবহে এবার নবান্নে এল ‘পত্রাঘাত’। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নবান্নে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে এই প্রকল্পের ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ তলব করা হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ দেখতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল রাজ্যে এসেছিল। তখন কয়েকটি জেলায় অসঙ্গতি পেয়েছিল। এবার সেই কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। নভেম্বর মাসের মধ্যেই তার প্রেক্ষিতে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠাতে হবে। সূত্রের খবর, রাজ্যের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জবাবি চিঠি পাঠানো হবে।

এদিকে আট মাস আগে এই বছরের মার্চ মাসে আবাস যোজনার দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। গ্রামে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। ওই প্রতিনিধিদের সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক, বিডিও–সহ প্রশাসনের অফিসাররা। তারপর রিপোর্ট জমা পড়েছিল কেন্দ্রের ঘরে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলায় আবাস যোজনার বরাদ্দ বন্ধ করে দেয় মোদী সরকার বলে অভিযোগ। এই টাকা বন্ধ হতেই, ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে বাংলাকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। নয়াদিল্লিতে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছিল। কিন্তু তারপরও কাটেনি জট। বরং এল পত্রাঘাত।

অন্যদিকে যতবারই কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য সরকার সরব হয়েছে ততবার কেন্দ্রকে সাফাই দিয়েছে, অর্থ অনুযায়ী কাজের হিসেবে গরমিল আছে। তাই অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্রের এই দাবি মোটেই সত্যি নয় এই কথা জানিয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সমস্ত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। তার পরও জোটেনি বকেয়া। উলটে এল পত্রাঘাত। কী ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের রিপোর্টে? কেন বন্ধ করে দেওয়া হল বরাদ্দ? রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার পাল্টা চিঠি এল নবান্নে। সূত্রের খবর, নদিয়া, কালিম্পং, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই প্রকল্পে অসঙ্গতির কথা লেখা হয়েছে চিঠিতে। তার সঙ্গে যোগ করা হয়েছে দুই মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমান।

আরও পড়ুন:‌ কেন এমন চিঠি রাজ্যপাল দিলেন? রাজ্যপালের আইনজীবীকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির

এছাড়া কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সফরের ৮ মাস পর এল সেই চিঠি। এই চিঠি আগে কেন পাঠানো হয়নি?‌ উঠছে প্রশ্ন। তবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পাঠাতে হবে নয়াদিল্লিকে। নবান্ন সূত্রে খবর, আগামীকাল মঙ্গলবারই পালটা চিঠি দেবে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‌এই বাংলা বিদ্বেষী, বাঙালি বিদ্বেষী বিজেপি বাংলাকে বঞ্চনা করার জন্য প্রকল্প বানায়। আর গর্ববোধ করে। ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার মানুষের বাড়ির টাকা, সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা, প্রথম কিস্তির টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা, একশোর দিনে টাকা তারা আটকে রেখেছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে রাজনীতিতে পেরে না উঠে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বাংলার আর্থিকভাবে বঞ্চনা করছে।’‌