কিছু ছাত্রীর ক্লাসে উপস্থিতির হার মাসে ৪–৫ দিন। তাই পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেননি প্রধান শিক্ষিকা। আর এটা নিয়েই গণ্ডগোল চরমে উঠল। স্কুলে এসে দলবল পাকিয়ে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্রীরা। যা দেখে চমকে ওঠেন প্রধান শিক্ষিকা। কারণ তাঁর সামনেই ব্লেড দিয়ে হাতের শিরা কাটার হুমকি দেন ছাত্রীরা। প্রধান শিক্ষিকাকে ‘অসভ্য’ বলে হুমকি দেন ছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকরা। দক্ষিণেশ্বর সারদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গেল। যদিও মুখে কুলুপ স্কুল কর্তৃপক্ষের। মোট ছ’জন ছাত্রীকে টেস্ট পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার জেরে স্কুলের মধ্যে তাণ্ডব দেখাল ছাত্রী ও অভিভাবকরা।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, কম উপস্থিতির হার থাকায় একাদশ শ্রেণির ছ’জন ছাত্রীকে টেস্ট পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তারপরই ওই ছয় ছাত্রীর অভিভাবকরা স্কুলের ভিতরে ঢুকে শিক্ষিকাদের হুমকি দেন। ছাত্রীরাও আত্মহত্যার হুমকি দেয়। পরীক্ষায় বসতে না দিলে স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যা করার হুমকিও দেয় এক ছাত্রী। স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালানো হয়। প্রধান শিক্ষিকাকে তাঁর চেয়ার থেকে তুলে সেখানে বসে পড়েন এক অভিভাবক। তিনি টেবিল চাপড়ে প্রধানশিক্ষিকাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে স্কুল সূত্রে খবর, ক্লাসে উপস্থিতির হার অনিয়মিত হওয়ায় একাদশ শ্রেণির ৬ জন ছাত্রীকে টেস্ট পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর তাই স্কুলে এসে সেই ছাত্রীর অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান। প্রধান শিক্ষিকার ঘরে ঢুকে চেয়ার টেবিলে ভাঙচুর চালানো হয়। এক ছাত্রীকে মোবাইল হাতে গোটা ঘটনার দৃশ্য ভিডিয়ো করতে দেখা যায়। তিনিই আবার বলতে থাকেন, ‘টেস্টে বসতে দেবে না, এটা কোন অসভ্যতা।’ এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দক্ষিণেশ্বর সারদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢোকে দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাকে নিজের আপন বাড়ি ভাবুন, সুখের ঘর’, লগ্নি টানতে বিভেদের বিরুদ্ধে বার্তা মমতার
এদিন ইউনিফর্ম পরা এক ছাত্রী হাতে ব্লেড নিয়ে শিরা কাটার হুমকি দিতে থাকে। তখন প্রধান শিক্ষিকা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘৪–৫টা ক্লাস করে কী করে কেউ পরীক্ষায় বসতে পারে।’ কিন্তু তাঁর উপর দিয়েই চিৎকার করতে থাকে ওই ছাত্রী এবং তার অভিভাবক। দক্ষিণেশ্বর সারদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় স্কুলটি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্রের বিধানসভা এলাকায়। তবে তাঁর কোনও বক্তব্য মেলেনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য, একান্তই স্কুলের বিষয় বলে কথা বাড়ায়নি।