Does PCOS Or PCOD Mean Maternal Disability? In What Way A Women Can Get Healthy And Normal Pregnancy Abpp

প্রিয়াঙ্কা দত্ত, কলকাতা: পিসিওডি (PCOD) এবং পিসিওএস (PCOS)। বর্তমানে মহিলাদের জীবনের সঙ্গে এই দুটো সমস্যা যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের মতে যার অন্যতম কারণ হল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, মানসিকচাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি। আর এই কারণেই মাতৃত্বের পথে একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন বেশিরভাগই। তাহলে উপায়? পিসিওডি ও পিসিওএস মানেই কি মা হওয়ার পথে বাধা? কীভাবে রোগকে সরিয়ে সন্তানের জন্ম দেওয়া সম্ভব? আদৌ কি কোনও উপায় রয়েছে?

এবিপি লাইভে মহিলাদের সমস্যা এবং তার সমাধান নিয়ে পরামর্শ দিলেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ পারভিন বানু (Associate professor, Calcutta National Medical College)

পিসিওডি, পিসিওএস কি একই?
পিসিওডি হল পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ (Polycystic ovary Disease)। অন্যদিকে, পিসিওএস হল পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (Polycystic ovary syndrome)। পিসিওডির ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের সময় ডিম্বাশয় থেকে অপরিণত ডিম্বাণু নির্গত করে। যেগুলি ওভারির গায়ে সিস্ট হিসেবে জমতে থাকে। অপরদিকে পিসিওএস মূলত এন্ডোক্রিন সিস্টেমের ভারসাম্যহীনতার কারণে পিসিওএস-এর সমস্যা তৈরি হয়। এটি হরমোন ঘটিত রোগ। সোজাভাবে বলতে গেলে পিসিওডি কেবলমাত্র ওভারিতে সমস্যা। এবং পিসিওএস ওভারির পাশাপাশি একাধিক সিস্টেমে সমস্যা। 

পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় থাকা মানেই সবসময় পিসিওএস নয়

নিচের যে কোন দুটি থাকলে পিসিওএস বলা হয় 

  • অনিয়মিত অথবা একদমই পিরিয়ড না হওয়া
  • মুখের বা শরীরের চুল বৃদ্ধি অথবা রক্তে অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরণ
  • আল্ট্রাসাউন্ডে পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় থাকা

রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব?
চিকিৎসকরা বলেছেন PCOD থেকে সেরে ওঠা কিছুক্ষেত্রে সম্ভব হলেও, PCOS তুলনামূলক জটিল হওয়ায় পুরোপুরি সেরে ওঠার হার একেবারেই কম। 

পিসিওডি এবং পিসিওএসে গর্ভধারনের সম্ভাবনা কতটা? 
সাপোর্টিভ ড্রাগ এবং ট্রিটমেন্টে পিসিওডিতে মাতৃত্ব সম্ভব হলেও, পিসিওএস-এর ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা থাকে। তবে সন্তানধারন এবং সুস্থ স্বাভাবিক জন্মদান শুধুমাত্র মহিলার একার ওপর নির্ভর করে না। এর জন্য ম্যাচিওর ডিম্বানুর পাশাপাশি ম্যাচিওর শুক্রানুর প্রয়োজন। অর্থাৎ পুরুষসঙ্গীর পিতৃত্বধারনের ক্ষমতা থাকাও একইরকম জরুরি। 

গর্ভধারনের জন্য শুক্রানু, ডিম্বানুর পাশাপাশি মাতৃত্বের আধার অর্থাৎ ইউটেরাস ও ফ্যালোপিয়ান টিউবকেও গঠনগতভাবে ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ সুস্থ জরায়ুসহ সমস্ত শর্তের সমাপতন হলেই সন্তানধারন সহজ হবে। 

এবার ধরা যাক সমস্ত শর্তই ঠিক রয়েছে। এর পর  পিসিওডি থাকলে সেক্ষেত্রে ওভুলেশন সম্ভব। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই   ovulation inducing drugs দিয়ে গর্ভধারন করানো হয়ে থাকে। যে সব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে হয় না সে ক্ষেত্রে অন্যভাবে চেষ্টা করা হয়। তবে মনে রাখতে হবে এগুলির একাধিক ভাল বা খারাপ দিক থাকে। চিকিৎসক রোগীকে পর্যবেক্ষণ করে তবেই পদক্ষেপ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে ফার্মাকোলজিক্যাল এবং সার্জিক্যাল- দুই পদ্ধতিই অবলম্বন করা হয়ে থাকে। আই ভি এভ এবং  আই ইউ আই বহুল প্রচলিত দুটি চিকিৎসা। 

তবে পিসিওএসে (PCOS) সমস্যা জটিল হলে দেখা যায় প্রেগন্যান্সি এলেও মিসক্যারেজ (mIS) বা প্রি ম্যাচিওর ডেলিভারি হয়। এবং সন্তান জন্ম নিলেও তার গঠনগত ত্রুটিও থাকে। 

গর্ভাবস্থায় কোন বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন?
গর্ভাবস্থায় গর্ভপাত, ডায়াবেটিস (জেস্টেশানাল ডায়াবেটিস মেলিটাস- জিডিএম), উচ্চ রক্তচাপ (প্রিএক্ল্যাম্পাসিয়া), বাচ্চার বৃদ্ধির সমস্যা, প্রিম্যাচিওর ডেলিভারির ঝুঁকি বেশি। অতএব, গর্ভাবস্থায় বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধানে নিয়মিত স্ক্যান এবং জিডিএম এর জন্য স্ক্রিনিং করা উচিত।

পিসিওএসের সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের কী সম্পর্ক?
পিসিওএসে মহিলাদের ফলিকলের মধ্যে ভাল সংখ্যায় ডিম থাকে কিন্তু সেগুলো বেরোতে (ওভুলেশন) পারে না। ফলস্বরূপ, শুক্রাণু ও ডিম মিলিত হতে পারে না। পাশাপাশি স্থূলতা, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরণ এবং ইনসুলিন এসবও বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন আপনি পিসিওএস বা পিসিওডিতে আক্রান্ত? 
পিসিওডি-এ অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। পিসিওএসে হরমোনাল ইমব্যালেন্স (পুরুষ হরমোন ক্ষরণ) ওজন বৃদ্ধি। চুল উঠে যাওয়া ইত্য়াদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। 

কখন সাবধান হবেন? 
একবার বা দুবার ঋতুচক্রে সমস্যা হলে সে ক্ষেত্রে ভয়ের কারণ নেই। তবে বারবার এই সমস্যা হলে বা উপরে উল্লেখ করা উপসর্গগুলো প্রকট হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দেখা যায়, উপসর্গ এড়িয়ে গিয়েই রোগীরা রোগ নির্ণয়ে দেরি করে ফেলেন। ফলে সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হয়ে যায়। 

ঝুঁকিতে কারা?
মূলত দুটো এজগ্রুপ এই তালিকায় রয়েছে। প্রথম, বয়সসন্ধিকাল। অর্থাৎ যখন ঋতুচক্র সদ্য শুরু হচ্ছে তখন পিসিওডি দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়, সন্তান জন্ম দেওয়ার পরেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারেন।

পিসিওডি বা পিসিওএসের মূল কারণ কী?
মূল চারটে কারণে এই রোগে আক্রান্ত হন মহিলারা। সফলভাবে প্রমাণিত না হলেও জিনগত (কোন জিন মার্ক করা সম্ভব হয়নি) পিসিওডি বা পিসিওএসে আক্রান্ত হতে পারেন মহিলারা। এ ছাড়াও মানসিক চাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং অভ্য়াস। 

চিকিৎসা কী?
এই রোগে সবার প্রথমে লাইভস্টাইল মডিফিকেশনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এর পর প্রয়োজনমতো ফার্মাকোলজিক্যাল বা নন ফার্মাকোলজিক্যাল পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করা হয়। 

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করবেন কীভাবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন বর্তমানে প্রতি ৪ জনের মধ্যে ২ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এর মূল কারণ অনিয়নন্ত্রিত জীবনযাপন। সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং ব্যায়াম এই রোগ নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ এবং সঠিক ওষুধ তো রয়েছেই।  

Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )

Calculate The Age Through Age Calculator