লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ভ্যানিশ, বড় প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বাড়ির মেয়ে–বধূরা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাড়ির মেয়ে–বধূদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা প্রত্যেক মাসে পাঠাচ্ছেন নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আর সেই টাকা প্রতারণা করে তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এটা করার পিছনে একটা বড় চক্র কাজ করছে। ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকার টাকা পাঠালেও তা ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। আধার এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেম (‌এইপিএস)‌ ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগ উঠল। রায়গঞ্জ, ইটাহার ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে বাংলার মহিলাদের টার্গেট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঠিক কী অভিযোগ উঠেছে?‌ সম্প্রতি এইপিএস কাজে লাগিয়ে রাজ্যের একাধিক জায়গায় জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছিল। আর তাতে দুর্গাপুজোর সময় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়েছিল বহু মানুষজনের। এই একই জালিয়াতির চক্র এবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উত্তর দিনাজপুর জেলায়। অভিযোগ উঠছে, মহিলাদের গোষ্ঠী গড়ে ঋণ দেওয়ার নামে নথি এবং বায়োমেট্রিক মেশিনে হাতের ছাপ নিচ্ছে একটি দল। সেসব মিটে যাওয়ার পরই গায়েব হয়ে যাচ্ছে টাকা। এখানের মহিলারা বলছেন, ব্যাঙ্কে আগে টাকা থাকত না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আসায় অ্যাকাউন্টে এখন কিছু টাকা থাকে। এই জালিয়াতির জেরে সেইসব টাকা ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছে। এক ব্যক্তি মহিলাদের গোষ্ঠী তৈরি করে লোন পাইয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এমন কাজ করেছে বলে অভিযোগ।

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ অনেক কারণে ঋণ দরকার হয়। মহিলারা এখন এমন ঋণ নিয়ে থাকেন। যা সপ্তাহে টাকা দিয়ে শোধ করেন। প্রতি সপ্তাহে টাকা দিয়ে বড় অঙ্কের ঋণ শোধ করেন। এই ভেবে ফাঁদে পা দিয়ে অনেক গৃহবধূ এবং বাড়ির যুবতীরা আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড–সহ ব্যাঙ্কের পাস বইয়ের প্রতিলিপি দেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে দেন হাতের ছাপ। ওই ব্যক্তি ঋণ দেওয়ার নাম করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফাই করেছে বলে মহিলাদের অভিযোগ। তার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এইপিএস। প্রতারিত রত্না রায়ের অভিযোগ, ‘‌ওই ব্যক্তি আমাদের চেনা। আমাদের নম্বর নিয়ে যায় ঋণ দেবে বলে। তারপর ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ভ্যানিশ হয়ে গেল।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘মিল উইথ গভর্নর’ কর্মসূচি আনছেন রাজ্যপাল, বর্ষপূর্তির দিন থেকেই হচ্ছে শুরু

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই ঘটনায় জেলায় বেশ আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকজন গৃহবধূর অভিযোগ, ৬ জন করে মোট তিনটে দলের সদস্যাদের আঙুলের ছাপ, নথি নেয়। আধার কার্ড, প্যান কার্ডের জেরক্স নেয়। সেখানে ঋণ তো পাননি। উল্টে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছে। রত্না বলেন, ‘‌আমরা সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানিয়েছি। আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা ভ্যানিশ হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা জমিয়ে এই টাকা করেছিলাম। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকেছে। আর তা ভ্যানিশ।’‌ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।