হাল্যান্ডের রেকর্ডের ম্যাচে ম্যানসিটি-লিভারপুলের পয়েন্ট ভাগাভাগি

আন্তর্জাতিক বিরতির পর ইউরোপিয়ান ফুটবলের শুরু হলো হাইভোল্টেজ ম্যাচ দিয়ে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি হয়েছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল। এই যুদ্ধে আর্লিং হাল্যান্ডের রেকর্ড গড়া গোলে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠে টানা ২৪ ম্যাচ জয়ের ধারা জয়ের পথে ছিল সিটিজেনরা। কিন্তু শেষ দিকে গোল শোধ করে তাদের হতাশ করেছে লিভারপুল। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ড্র হয়েছে ১-১ গোলে।

ম্যাচঘড়ির কাঁটা আধাঘণ্টা পার হওয়ার আগেই গোলকিপারের ভুলে গোল হজম করে লিভারপুল। ২৭ মিনিটে আলিসন বেকার দ্রুত কিক নিলে বল পড়ে নাথান আকের সামনে। সোবোসলাই ও আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডের ফাঁক গলে তিনি খুঁজে পান হাল্যান্ডকে। বক্সের ভেতরেই ছিলেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। কোনও ভুল করেননি, ডানদিক দিয়ে জাল কাঁপান হাল্যান্ড। সিটির জার্সিতে লিভারপুলের বিপক্ষে করেন প্রথম গোল। তাতে অ্যান্ডি কোলের গড়া প্রিমিয়ার লিগে দ্রুততম ৫০ গোলের রেকর্ডও ভেঙে দেন তিনি। লিগে গোলের হাফ সেঞ্চুরি করতে ডর্টমুন্ডের সাবেক স্ট্রাইকার খেলেছেন ৪৮ ম্যাচ। অর্ধশত গোল করতে ৬৫ ম্যাচ লেগেছিল ম্যানইউ গ্রেট কোলের।

আলিসনের একই ভুলে ১১ মিনিটে গোল খেতে বসেছিল লিভারপুল। ব্রাজিল গোলকিপার সরাসরি পাস দেন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় ফিল ফডেনের পায়ে। ইংলিশ ফরোয়ার্ডের শট দুর্বল ছিল বলে বেঁচে যায় অতিথিরা। তার শট সরাসরি আলিসনের হাতে ধরা পড়ে।

বিরতির খানিকক্ষণ আগে সিটিজেনরা দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল। গোলকিপার এডারসনের ক্রস ধরে সিলভা মাঝমাঠে বল বাড়ান। তার পাস পায়ে নেন আলভারেজ। তিনি খুঁজে পান ফডেনকে। ইংলিশ ফরোয়ার্ডের নিচু শট ঝাঁপিয়ে গোলবারের পাশ দিয়ে বাইরে পাঠান। এক গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে স্বাগতিকরা।

৫৩ মিনিটে আলভারেজের বাঁ পায়ের শট ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে গেলে ম্যানসিটির ব্যবধান ২-০ হয়নি। ৬৮ মিনিটে তাদের জাল কাঁপায় লিভারপুল। আলভারেজের কর্নার আলিসনের মাথার ওপর দিয়ে ভেসে যেতেই রুবেন দিয়াজ দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। কিন্তু ভিএআরে গোলটি বাতিল হয় আলিসনকে আকাঞ্জি ফাউল করায়। লিভারপুল গোলকিপার সহজেই বল হাতে নিতে পারতেন, কিন্তু ম্যানসিটির খেলোয়াড় তার কাঁধে চাপ দিয়ে বাধা তৈরি করেন।

চার মিনিট পর এডারসন দুর্দান্ত সেভে লিভারপুলকে হতাশ করেন। মোহাম্মদ সালাহর পাস ধরে ডারউইন নুনেজ তার মার্কারকে পরাস্ত করে লক্ষ্যে শট নেন। ম্যানসিটি কিপার দক্ষতার সঙ্গে কাছের পোস্টের দিকে ডাইভ দিয়ে বল ফিরিয়ে দেন।

অবশেষে স্বস্তির গোল পেয়ে যায় লিভারপুল। খেলার ১০ মিনিট বাকি থাকতে তারা সমতা ফেরায়। সালাহর বাড়ানো পাসে বক্সের সামনে থেকে বল পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে জালে বল জড়ান আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড।

ইনজুরি টাইম আট মিনিট যোগ করা হয়। তাতেও কেউ ম্যাচের পার্থক্য গড়তে পারেনি। অবশ্য একেবারে শেষ মুহূর্তে হাল্যান্ড জয়সূচক গোলের কাছে ছিলেন। আলভারেজের ভাসানো বলে কাছের পোস্টে উঁচুতে লাফিয়ে হেড করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। আলিসনের ভাগ্য ভালো, বল ব্যাকপোস্টের কয়েক ইঞ্চি পাশ দিয়ে মাঠের বাইরে যায়। গোলপোস্টের সামনে সিটির কোনও খেলোয়াড় থাকলেও কপাল পুড়তো লিভারপুলের।

আগের মতোই এক পয়েন্টের ব্যবধান থাকলো দুই শীর্ষ দলের। ১৩ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট ম্যানসিটির, লিভারপুলের ২৮ পয়েন্ট। তবে তাদের পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে যেতে পারে আর্সেনাল (২৭), সেই লক্ষ্যেই ঘণ্টাখানেক পর ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে নামবে গানাররা।