Autism cure research: অটিজম চিকিৎসায় নয়া দিশা! ওষুধের খোঁজে ফ্রান্সের ল্যাবে বাঙালি বিজ্ঞানী

অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায়, সে ঠিকভাবে মায়ের দুধ খেতে পারছে না। আবার বড় হয়ে ঠিক উল্টো। অস্বাভাবিক হারে খাবার খেতে ভালোবাসে। পাশাপাশি সামাজিক মেলামেশায় আতঙ্ক বোধ করে তাঁরা। চারপাশের পরিবেশরকে ভয় পায়। অস্বাভাবিক আচরণ করে। রাগ ও বিরক্তি দেখায়। এই সবই একটি বিরল জিনের অসুখ। যার নাম ‘প্রেডার উইলি সিন্ড্রোম’ (পিডব্লিউএস)।

অটিজম রোগের মধ্যে পড়লেও এই রোগের অনেকটাই অজানা। সম্প্রতি এই নিয়েই গবেষণা চলছে ফ্রান্সের ‘ইনস্টিটিউট অব ফাংশনাল জিনোমিকস’-এ। গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন তিন বিজ্ঞানী — প্রবহণ চক্রবর্তী, ইয়ান দ্রোমার্দ এবং অ্যামিলি বোরি। 

(আরও পড়ুন: যৌনসুখে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে শীত! ৪ রোগই কালপ্রিট পুরুষদের জন্য)

কেন এই প্রবণতাগুলি দেখা যায়? বিজ্ঞানীদের কথায়, পিডব্লিউএস রোগীর শরীরে ‘মেজেল২’ জিনটি থাকে না। গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের শরীর থেকে এই জিন মুছে দেন। এবার এই জিন-পরিবর্তিত ইঁদুর ও তার সুস্থ-স্বাভাবিক ইঁদুর সঙ্গীদের একটি ভয়ের পরিস্থিতিতে ফেলা হয়। কিছু অচেনা ইঁদুর ছাড়া হয় তাদের খাঁচায়। যারা জিনগত ভাবে সুস্থ, একটা সময়ের পর তারা ধীরে ধীরে মানিয়ে নেয়। কিন্তু অসুস্থ ইঁদুরগুলো তা পারে না।

সংবাদমাধ্যমকে প্রবহণ জানিয়েছেন, সামাজিক মেলামেশা ও সঠিক ব্যবহারের জন্য মস্তিষ্কে দু’টি হরমোন তৈরি হওয়া জরুরি। অক্সিটোসিন এবং ভ্যাসোপ্রোসিন। মস্তিষ্কের ঠিক স্থান থেকে ঠিক পরিমাণে বেরিয়ে ঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় এদের। তবেই একজনের মেলামেশা স্বাভাবিক হয়। গবেষণাগারে দেখা যায়, সুস্থ ইঁদুরগুলির মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের সুপ্রাঅপটিক নিউক্লিয়াস থেকে পেপটাইড দু’টি তৈরি হয়। তার পর এরা মস্তিষ্কের মাঝামাঝি অংশ ল্যাটারাল সেপটাম-এ পৌঁছয়। কিন্তু অসুস্থ ইঁদুরগুলিতে এই প্রক্রিয়াটি দেখা যায়নি। এর জন্যই এদের মধ্যে সামাজিক সংযোগ স্থাপনের স্কিলের অভাব দেখা যায়। আচমকা রাগ, বিরক্তি ও অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায় তাদের মধ্যে। (আরও পড়ুন: অল্পতেই মাথা গরম, তুমুল চোটপাট! ঘন ঘন রাগ চড়ে যায় এই ৫ রাশির)

ল্যাটেরাল সেপটামে কী হয়? মস্তিষ্কের ওই জায়গায় সোমাটোস্ট্যাটিন স্নায়ুকোষ রয়েছে। অক্সিটোসিন ল্যাটেরাল সেপটামে গিয়ে এদের উত্তেজিত করে। সোমাটোস্ট্যাটিন কোষগুলি মস্তিষ্কে ভীতি, আতঙ্ক তৈরি করে। যা নিয়ন্ত্রণ করে অক্সিটোসিন। পিডব্লিউএস রোগীদের মস্তিষ্কে অক্সিটোসিন ল্যাটেরাল সেপটামে পৌঁছয় না। তাই সোমাটোস্ট্যাটিন অতিরিক্ত মাত্রায় সক্রিয় হয়ে থাকে। গবেষণার পরের ধাপে সোমাটোস্ট্যাটিনকে নিস্ক্রিয় করার পদ্ধতিই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা। এই ওষুধটির জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে অপটোজেনেটিকসকে। এর খোঁজ পেলেই বিরল অসুখটির চিকিৎসা খুঁজে পাওয়া সম্ভব বলে জানান প্রবহন।