Nabadwip Raas: নবদ্বীপে রাস মানেই শাক্ত-বৈষ্ণবের মিলন! ভক্তের পুজো পান মঙ্গলকাব্যের দেবীও

নবদ্বীপের রাস উৎসব বহুদিন ধরেই বিখ্যাত সারা বাংলায়। কিন্তু এর সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে কিছু বিশেষত্ব। নামে রাস উৎসব হলেও এক তিথিতে পূজিত হন নানা দেবদেবী। শাক্ত মূর্তির সঙ্গে পুজো পান বৈষ্ণবধারার প্রতিমা। সনাতন ধর্মের সার্বিক সমন্বয় ঘটে নবদ্বীপের রাস উৎসবে।

(আরও পড়ুন: শীত এলেই বাড়ে গেঁটে বাতের ব্যথা, এই সবজির রস খেলেই বড় ম্যাজিক হবে)

শবশিবা মাতা:

শবশিবা মাতা

(ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)

১৭৫২-৫৬ সালের মাঝামাঝি শঙ্করনাথ তর্কবাগীশ শক্তিমূর্তি গড়ে রাস পূর্ণিমার পুজো শুরু করেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের তরফে আসে অর্থসাহায্য। শঙ্করনাথের ওই পুজোর পরের বছরই ব্যাদড়াপাড়ার ব্রাহ্মণরা শবশিবা মায়ের পুজো শুরু করলেন। কালীমূর্তির নীচে পর পর দু’টি শিব। এক দম নীচে শবরূপী শিব। তাঁর উপরে সপ্রাণ শিব। একই মূর্তির পুজো হয় আমপুলিয়া পাড়াতেও। নবদ্বীপে রাসের দ্বিতীয় প্রাচীন প্রতিমা হল শবশিবা মাতার।

(আরও পড়ুন: অন্ত্রে মাছি, খাবারে নাকি ছিল না! কোন ‘ফাঁক’ গলে ঢুকল তবে? ধন্দে চিকিৎসকরা)

স্থানীয় পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, শবশিবা মাতা কৃষ্ণচন্দ্রের গুরুদেব চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্যের ইষ্টদেবী। এখন যেখানে পুজো হয় সেটি ছিল তাঁর ভিটে। কমবেশি দেড়শো বছর আগে তাঁরা এখান থেকে চলে যান। পুজোর ভার নেন অঞ্চলের বর্ধিষ্ণু ব্রাহ্মণেরা। যাদের মধ্যে অন্যতম পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য, তার কন্যা ভগবতীদেবী, নসুজীবন ভট্টাচার্য প্রমুখ। চাঁদা তুলে এই পুজো হয়। এবারের বাজেট প্রায় দু’লক্ষ টাকা।

গঙ্গা মাতা:

<p>গঙ্গা মাতা</p>

গঙ্গা মাতা

(ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)

রাসে নবদ্বীপে গঙ্গা মূর্তি পুজো বহু বছর ধরে হচ্ছে। পুরাণ কাহিনি মতে, ভগীরথের মর্ত্যে গঙ্গা আনয়নের দৃশ্যই ফুটে ওঠে প্রতিমার গড়নে। এলাকার অন্যতম বড় প্রতিমা হল বেগুনিয়া পাড়ার গঙ্গা মাতা। ১৯৭২ সাল। কয়েক জন যুবক গোপাল সেন, সাহেব পাল, গৌড় পাল, কালী পালদের মনে ইচ্ছে জাগে – রাসে পাড়ায় একটা পুজো হোক। অনেক খুঁজে শেষে এক পালবাড়িতে গিয়ে দেখা যায় একটি মাত্র গঙ্গা প্রতিমা অবিক্রিত পড়ে আছে। দরদাম করে তিন টাকায় সেই প্রতিমা কিনে শুরু হয় বেগুনিয়া পাড়ার রাস। সেই পুজো এবার ৫২ বছরে পদার্পণ করেছে। পুজোর বাজেট এ বার তিন লক্ষ টাকা।

কমলেকামিনী মাতা:

<p>কমলেকামিনী মাতা</p>

কমলেকামিনী মাতা

(ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)

নবদ্বীপের রাসের বিশেষত্ব তার মূর্তির বৈচিত্র্যে। মঙ্গলকাব্যের দেবী কমলেকামিনীর দেখা মেলে রাস উৎসবে। নবদ্বীপে স্মৃতিশাস্ত্র পড়তে আসা অশ্বিনী কুমার স্মৃতিরত্ন এই পুজোর সূচনা করেন। তাঁর পরিবারের উত্তরসূরী পঞ্চম পুরুষ সুশান্তকুমার ভট্টাচার্য বর্তমানে সেই পুজো করছেন। বর্তমানে পুজো এলাকাবাসীর সাহায্যে হয়। পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে নবদ্বীপ তরুণ সঙ্ঘ । এবারের পুজোর বাজেট প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা।