ভারতে মুসলিম সেজে অপরাধে জড়ানোর প্রবণতা কেন বাড়ছে?

ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিভিন্ন হয়রানি ও নিপীড়নের খবর পুরনো। গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগ তুলে কিংবা গরু বিক্রির অভিযোগেও গত কয়েক বছর ধরে মুসলিমদের গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা খবর হয়ে আসছে। এবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্ক্রল-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশটিতে মুসলিম সেজে বা মুসলিম নাম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করার প্রবণতা বেড়েছে। ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তির মধ্যে মুসলিম পরিচয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে বা কর্মকাণ্ডে জড়াতে দেখা গেছে। তাদের কেউ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াতে, কেউ আবার জনপ্রিয়তার আশায়, কেউ বা নেহায়েত অর্থের প্রলোভনে এসব কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রদায়িকভাবে অস্থির একটি সমাজে এই ধরনের মামলায় অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুসলিম পরিচয় অপরাধের মাত্রার চেয়ে তীব্রতা ব্যাপকতর হিসেবে হাজির হয়। আর এভাবেই ভারতে ইসলামবিদ্বেষ আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

২৭ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে তিনটি হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারপারসন মুকেশ আম্বানি। হুমকিগুলো [email protected] ই-মেইল ঠিকানা থেকে তার অফিসের মেইল ঠিকানায় পাঠানো হয়েছিল। ই-মেইল অ্যাড্রেসটি দেখে হুমকি দেওয়া ব্যক্তিটিকে মুসলমান মনে হলেও ঘটনা আসলে ভিন্ন। মুম্বাই পুলিশের তদন্তে দ্রুতই আসল ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। মুসলিম ব্যক্তির নামের ই-মেইলের আড়ালে থাকা ব্যক্তিটি রাজবীর খান্ত নামের ২১ বছর বয়সী একজন হিন্দু ছাত্র।

পুলিশ জানিয়েছে, মজার ছলে রাজবীল খান্ত তার বন্ধুদের দেখানোর জন্য হুমকি দিয়ে মেইলটি পাঠায়। যা একটি ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করে পাঠানো হয়েছিল।

পুলিশকে তিনি জানান, একটি ক্রিকেট ম্যাচ দেখার সময় একই নামের একজন পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের ব্যাপারে জানতে পারেন তিনি। তখন শাদাব খান নামটি ব্যবহার করার ধারণা তার মাথায় আসে।

অপরাধ করার সময় এমন ভুয়া মুসলিম পরিচয় গ্রহণ করা খান্ত একমাত্র ব্যক্তি নন। মেয়েদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ক্ষুব্ধ পুরুষ থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ার কন্টেন্ট নির্মাতারা তাদের উসকানিমূলক ভিডিও ভাইরাল করতে গিয়ে মুসলিম হওয়ার ভান করছেন। আর গত কয়েক বছরে এই পদ্ধতির ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রদায়িকভাবে অস্থির একটি পরিবেশে, এই ধরনের মামলায় অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুসলিম পরিচয় অপরাধের তীব্রতার চেয়ে আরও ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়। আর এভাবেই ভারতে ইসলামবিদ্বেষ আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বে উসকানি

ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধগুলো নিয়ে কাজ করেন সাংবাদিক আলিশান জাফরি। স্ক্রলকে তিনি বলেন, সন্দেহভাজন বা অভিযুক্তের মুসলিম পরিচয় সম্প্রদায়টির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহার করা হয়।

জাফরি বলেন, ‘এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আপনি দেখতে পাবেন, যখন অভিযুক্ত এক ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষেই মুসলিম, খবরের শিরোনাম বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে অপরাধী হিসেবে তার নাম উল্লেখ করা হয়। যেখানে অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে অপরাধীদের শুধু তাদের লিঙ্গ বা বয়স দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।’

ফ্যাক্ট-চেকার এবং সংবাদমাধ্যম পর্যালোচনাকারীদের পর্যবেক্ষণেও জাফরির এ বিশ্লেষণ প্রতিফলিত হয়েছে।

জাফরি বলেন, যখন কোনও ব্যক্তি মুসলিম হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দেয়, সেই ক্ষেত্রে এই প্রবণতা আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। ইউটিউব ভিডিওতে নিজেকে রশিদ খান হিসেবে পরিচয় দেওয়া ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা বিকাশ কুমারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, একজন মুসলিম লিভ-ইন পার্টনারের হাতে শ্রদ্ধা ওয়াকারের হত্যার বিষয়ে ভুয়া পরিচয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন এই বিকাশ কুমার।

গত বছরের নভেম্বরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে, রশিদ খান নামে হাজির হয়ে বিকাশ কুমার বলেছিলেন, ‘হত্যাকারীর রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কাউকে হত্যা করা এবং তাদের দেহ কেটে ফেলা স্বাভাবিক।’

এমন মন্তব্যের জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের কুমার বলেন, ভিডিওটি শুটিং করার সময় প্রাথমিকভাবে নিজের আসল নামেই পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। তবে ভিডিও নির্মাতারা তখন তাকে নিয়ে ঠাট্টা করে, তাকে বলে যে, সে নিশ্চয়ই মুসলমান এবং মিথ্যা বলছে।

কুমারকে গ্রেফতার করার পর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা উল্লেখ করেছেন, প্রশ্নের মুখে পড়া ইউটিউব চ্যানেলটি পরিচালনাকারী অঙ্কুর আর্য নিয়মিত উসকানিমূলক ভিডিও পোস্ট করেন।

জাফরি বলেন, ‘আপনি যদি আর্যের মতো ইউটিউব চ্যানেলগুলো দেখেন, সেগুলোতে বেশ কয়েকটি ভক্স পপ ভিডিও পাবেন, যেখানে একজন মুসলিমকে সংবেদনশীল বিষয়ে মন্তব্য করতে বলা হচ্ছে। কারণ, এই ধরনের বিষয়বস্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এমনকি এই ধরনের অনেক ভিডিও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা এবং কর্মকর্তারাও শেয়ার করে থাকেন।’

দ্য ক্যারাভান ম্যাগাজিনের জন্য লেখা একটি নিবন্ধে জাফরি সহ-লেখকের ভূমিকা পালন করেছেন। ওই প্রবন্ধে তিনি ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে এই ধরনের ভিডিওগুলো ঘৃণা ছড়ায় এবং ‘অনেক হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঠেলে দেয়’।

অন্য একটি উদাহরণে অক্টোবরে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে এক ব্যক্তি নিজেকে জাভেদ হুসেন নামে পরিচয় দিয়ে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন। হরিদ্বারে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পর পুলিশ জানতে পারে, তার আসল নাম দিলীপ বাঘেল। এক ইউটিউবার তাকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এমন মন্তব্য করিয়েছেন।

ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ে লিখেছেন শিক্ষাবিদ রাম পুনিয়ানি। এমন ঘটনাগুলোকে তিনি সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় স্থাপনায় নিষিদ্ধ মাংস রাখার উদাহরণগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন।

পুনিয়ানি স্ক্রলকে বলেন, ‘ঘটনাটি এই দেশের দরিদ্রদের দুর্দশার কথাও তুলে ধরে যারা অর্থের লোভে এই ধরনের কাজ করতে প্রস্তুত।’ তিনি আরও বলেন, আপনি যদি গোবিন্দ নিহালানির ‘তমাস’ সিনেমার কথা মনে করেন, তাহলে দেখবেন, সেখানে এক দলিত ব্যক্তিকে একটি মসজিদে শূকরের মৃতদেহ রাখার জন্য ফাঁসানো হয়েছে।’

পুনিয়ানি বলেন, ছদ্মবেশে এই ধরনের ঘটনা মূলত মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণাকে নিশ্চিত ও তীব্র করে।

তিনি বলেন, ‘কোনও অপরাধের সঙ্গে কোনও মুসলমানের নাম জড়িয়ে গেলে মানুষ সহজেই বিশ্বাস করে ফেলে যে, ওই ব্যক্তি নিশ্চয়ই ভুল কিছু করেছে। এমনকি পুলিশও কিছু ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। এমনটি ঘটলে তদন্তে বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

উদাহরণস্বরূপ তিনি অক্টোবরে কানপুরে এক টিউশন শিক্ষকের সঙ্গীর হাতে ১৭ বছর বয়সী একটি ছেলের খুন করার ঘটনা উল্লেখ করেন। তার সন্দেহ, ওই কিশোর ও শিক্ষিকার মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। নিখোঁজ হওয়া ছেলেটিকে অপহরণ করা হয়েছে এমনটা দেখানোর প্রয়াসে, প্রভাত শুক্লা নামে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছেলেটির বাসায় একটি মুক্তিপণের চিঠি পাঠানো হয়। যাতে লেখা ছিল ‘আল্লাহু আকবর’। পুলিশ জানায়, তদন্তের গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এই ধর্মীয় স্লোগানটি লেখা হয়েছিল।

সেপ্টেম্বরে কেরালায় এক ভারতীয় সেনাকে মিথ্যা বক্তব্য দেওয়ার জন্য গ্রেফতার করা হয়। তিনি দাবি করেছিলেন, ছয়জনের একটি দল তাকে আক্রমণ করেছিল। এসময় তারা তার পিটে ‘পিএফআই’ আদ্যক্ষর লিখে দিয়েছে।

পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) হলো একটি মুসলিম সংগঠন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ‘হিংসাত্মক সন্ত্রাসী কার্যকলাপে’ জড়িত থাকার অভিযোগে সেটিকে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকার।

ছদ্মবেশ নিয়ন্ত্রণে সোশ্যাল মিডিয়ার নীতিমালায় ঘাটতি

সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের কারণে ছদ্মবেশ ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। ২২ নভেম্বর, ভারতের সাবেক ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের মেয়ে সারা টেন্ডুলকার অভিযোগ করেন, তার মর্ফ করা ছবি দিয়ে এক্স-এ তারই নামের একটি নকল অ্যাকাউন্ট চালু করা হয়েছে।

ভারতে ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট লজিক্যালি ফ্যাক্টস-এর প্রধান কৃতিকা গোয়েল স্ক্রলকে বলেছেন, সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে ইচ্ছুক যেকোনও ব্যবহারকারীকে ভেরিফায়েড চিহ্ন (নীল টিক) দেওয়ার জন্য এক্স-এর নীতি পরিবর্তন মাইক্রো-ব্লগিং প্ল্যাটফর্মটিতে ছদ্মবেশকে সহজ করে তুলেছে।

তিনি বলেন, ‘সবাই জানেন না যে নীল টিকটি আর বিশ্বাসযোগ্য নয়। এছাড়া, মূল সমস্যা হলো, ছদ্মবেশধারীর পরিচয়ের সত্যতা যাচাই বা পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই অনেক মানুষ কিছু ভুল তথ্য শেয়ার করে ফেলেন। তাই যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই যায়।’

একজন এক্স ব্যবহারকারীর উদাহরণ টেনে গোয়েল বলেন, ওই ব্যবহারকারী নিজেকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিক হিসেবে মিথ্যা দাবি করেছেন। একটি টুইট পোস্টে তিনি বলেছিলেন, ‘গাজা উপত্যকায় আল-আহলি হাসপাতালে বিমান হামলার জন্য জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস দায়ী ছিল, হামলায় শত শত মানুষ মারা যায়,’ পোস্টটি হাজার হাজার ব্যবহারকারী শেয়ার করেছেন।

পরে আল-জাজিরা স্পষ্ট করে জানায়, এক্স ব্যবহারকারী ওই ব্যক্তি তাদের সঙ্গে যুক্ত নন। ওই ব্যবহারকারী একজন ভারতীয় এবং এর আগে বিজেপির সমর্থনে টুইট পোস্ট করেছিলেন তিনি।

গোয়েল আরও বলেন, ভারতে মুসলমানদের ছদ্মবেশে সামাজিক মিডিয়া অপব্যবহারের ঘটনা লক্ষ্য করেছেন তিনি। দুই বছর আগের একটি ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেন, ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ৯ মাস বয়সী কন্যাকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিলেন একজন টুইটার ব্যবহারকারী। বেশকিছু মানুষের দাবি ছিল, সেটি পাকিস্তান থেকে পরিচালিত একটি বট অ্যাকাউন্ট। পরে পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, অপরাধী হায়দরাবাদের একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।

ওই অ্যাকাউন্টটির প্রোফাইল নাম একটি মুসলিম মেয়ের নামে ছিল। তাই সেটি একটি পাকিস্তানি বট অ্যাকাউন্ট, এমন দাবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ নজর কাড়ে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিটি রামনাগেশ আলিবাথিনি নামে ২৩ বছর বয়সী হিন্দু ব্যক্তি বলে প্রমাণিত হয়।

একই রকম আরেকটি ঘটনা ঘটে কর্ণাটকে। ২০২২ সালের জুলাই মাসে একটি মুসলিম নামের সোশ্যাল মিডিয়ায় স্থানীয় দেবতা সম্পর্কে মানহানিকর মন্তব্য পোস্ট করে কোডাগুর বাসিন্দা ডিভিন দেবাইয়া। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গোয়েল স্ক্রলকে বলেন, সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণা অনেক বেশি ছড়ানো হয়। সেখানে ইতোমধ্যে একটি গোষ্ঠী রয়েছে, যারা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। মুসলিম নামের একজন ব্যবহারকারীর কাছ থেকে পাওয়া ঘৃণাবাদী পোস্টগুলো তাদেরকে মূল সমাজ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তোলার কাজটি আরও সহজ করে দেয়।