মার্কিন অগার মেশিন ভেঙেছে ড্রিল করতে করতে। আর তা মেরামত করা সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়। এই আবহে গতকালই পাহাড়ের ওপর ভার্টিকাল ড্রিল মেশিন পৌঁছে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। আর আজ সকালে শুরু হল পাহাড়ের ওপর থেকে ড্রিল করার কাজ। এদিকে হায়দরাবাদ থেকে প্লাজমা কাটার মেশিন ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে উত্তরকাশীতে। সেই যন্ত্র দিয়ে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা অগার মেশিন কেটে বের করার কাজ চলছে। কোনও কারণে যদি ভার্টিকাল ড্রিলেও সাফল্য না আসে, তখন আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করতে সাবল আর গাঁইতি হাতে কর্মীদের কাজে নামানো হবে। তবে এই পদ্ধতিতে বহু দিন লাগবে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করতে। কারণ, ধসে পড়া ধ্বসংস্তূপ দিয়ে যে গর্ত এখনও পর্যন্ত অগার মেশিন তৈরি করেছে, তা দিয়ে ঢুকে একজন কর্মীই সাবল গাঁইতি হাতে খনন কাজ চালাতে পারবেন। পরে তিনি বেরিয়ে এলে অপরজন ঢুকে সেই কাজ জারি রাখবেন। (আরও পড়ুন: এই কাজ না করলে বেশি দামে কিনতে হবে LPG সিলিন্ডার, মাথায় হাত পড়বে আম জনতার?)
প্রসঙ্গত, গত ১৪ দিন ধরে উত্তরকাশীর টানেলে আটকে রয়েছেন বাংলার ৩ সহ মোট ৪১ জন শ্রমিক। বিগত কয়েকদিনে উদ্ধারকাজে গতি এসেছিল। তবে হিমালয়ের খামখেয়ালিপনার জেরে বারবারই থমকেছে ড্রিলিংয়ের কাজ। এর জেরে এখনও টানেলে বসেই প্রহর গুনতে হচ্ছে ৪১ জন শ্রমিককে। বিগত দিনে দু’বার হিমালয়ের খামখেয়ালিপনায় আটকে যায় উদ্ধারকাজ। গত বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও ফের একবার ড্রিল করতে গিয়ে পাহাড়ে কোনও এক ধাতব বস্তুর মুখোমুখি হতে হয় উদ্ধারকর্মীদের। এর জেরে ড্রিল মেশিন থমকে যায়। এর আগে শুক্রবার সাংবাদিকদের জানানো হয়েছিল, আরও ১২ মিটার ড্রিল করলেই আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানো যাবে। তবে সেটুকু পথ পাড়ি দিতেই অনেক বাধার মুখে পড়তে হয় অগার মেশিনকে। এই আবহে অগার মেশিনের সাহায্যে ড্রিল করার বিকল্প থেকে সরে আসে উদ্ধারকারী দল। অথচ গত বুধবার সন্ধ্যা-রাতের দিকে মনে করা হচ্ছিল, যে কোনও মুহূর্তে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এরই মাঝে শনিবার জানিয়ে দেওয়া হয়, অগার মেশিনের সাহায্যে আর ড্রিল করা হবে না।
আরও পড়ুন: বন্দে ভারতে চেপে মনে হবে এ যেন বিমান! চালু ‘পাইলট’ প্রকল্প, মিলবে কোন সুবিধা?
রিপোর্ট অনুযায়ী, সিল্কিয়ারা এবং দন্ডলগাওঁয়ের মাঝে তৈরি হচ্ছিল এই টানেলটি। গত ১২ নভেম্বর খুব ভোরে সেই টানেলে ধস নামে। এই গোটা টানেলটি সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা বলে জানা গিয়েছে। তারই মধ্যে ১৫০ মিটার লম্বা এলাকা জুড়ে ধসটা নামে ভোর ৪টে নাগাদ। জানা গিয়েছে, টানেলের সামনের দিক থেকে ভিতরের দিকে প্রায় ১৫০ মিটার জমি ধসে পড়ে ওপর থেকে। অর্থাৎ, টানেলের ছাদ ধসে পড়ে। তাতেই আটকা পড়ে যান শ্রমিকরা। প্রসঙ্গত, ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কটি চারধাম রোড প্রোজেক্টের অংশ। এই সড়ক সারা বছর সব ধরনের প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেই চালু থাকার কথা। এই সড়কটি তৈরি হলে উত্তরকাশী এবং যমুনোত্রীর মধ্যে যারাপথ ২৬ কিলোমিটার কমে আসবে।