ভারতের হারে ‘উল্লাস’: চঞ্চলে উত্তেজনা, মোশাররফে স্বস্তি!

অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারতের ক্রিকেট দল। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় তারা। এই পরাজয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের একটা অংশ ‘উল্লাস’ করেছে। যেটার নজির দেখা গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

বিষয়টি নিয়ে বিপরীত প্রতিক্রিয়া মিলেছে ভারতবাসীর দিক থেকেও। সেখানকার সাধারণ মানুষ যেমন বাংলাদেশিদের কটাক্ষ করেছে, তেমনি এ দেশের মানুষকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে কিছু টুরিস্ট হোটেলও। দুই দেশের নেটিজেনদের মধ্যে যখন ক্রিকেট কেন্দ্রিকে তর্কের আগুন জ্বলছে, তখন তাতে ঘি হয়ে আসে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর একটি মন্তব্য।

দিন কয়েক আগে ওপার বাংলার একটি গণমাধ্যম থেক তার কাছে ভারতের হারে বাংলাদেশীদের ‘উল্লাস’র বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে চঞ্চল বলেছেন, ‘উচ্ছ্বাস প্রকাশ করাটা যার যার মতাদর্শের ওপর নির্ভর করে। যেমন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়লেই সে ভারত সাপোর্ট করবে, পাকিস্তান সাপোর্ট করবে না কিংবা অন্য দলকে পছন্দ করবে না এমনটা কিন্তু নয়। এটা বাস্তব। সব দেশেই এমন থাকে। বাংলাদেশেও আছে।’

তবে বিপত্তি বাঁধে চঞ্চলের মন্তব্যের পরের অংশে। যেখানে তিনি ক্রিকেট প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের কথাও টেনে আনেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যেমন আছে আবার বিপক্ষের শক্তিও আছে। তাই এদেশে ভারত পাকিস্তান খেলা হলে পাকিস্তানের সমর্থকও থাকবে। এ দেশে ভারত বিদ্বেষীও আছে। তবে এ দৃশ্য বাংলাদেশের সার্বিক দৃশ্য নয়।’

চঞ্চলের এই মন্তব্য বাস্তব সম্মত হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনার ঢেউ ওঠে। বাংলাদেশের অনেকে এই অভিনেতাকে বয়কটের ডাকও দিয়েছেন! যদিও এসবের বিপরীতে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি অভিনেতা। এটুকু বলেছেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একটা অংশ। আমার মন্তব্যকে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমি আর কোনও মন্তব্য করতে রাজি নই।’

এদিকে একই ইস্যুতে এবার মন্তব্য করলেন দেশের আরেক দাপুটে অভিনেতা মোশাররফ করিম। যিনি চঞ্চলেরই বন্ধু, নাট্যাঙ্গনের সহযোদ্ধা। তবে চঞ্চলের সুরে নয়, মোশাররফ প্রসঙ্গটি সচেতনভাবে সামলেছেন নিজের মতো করে।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরে নাট্য উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হন মোশাররফ করিম। সেখানেই তাকে ঘিরে ধরে গণমাধ্যমকর্মীরা। ‘ভারতের হারে বাংলাদেশিদের উল্লাস’ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ‘অজ্ঞাতনামা’ তারকা বললেন, ‘আমি জানতাম এই প্রশ্নটা আমার কাছে আসবে। কিন্তু আমার যেটা মনে হয়, খেলা মাঠের মধ্যে থাকাই ভালো। খেলা আসলে খেলা। এই জিনিসগুলোকে বিভিন্নভাবে উসকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়, যেটা সুখকর মনে হয় না। আর এই বিষয়গুলোকে আমি খুব বড় করে দেখি না। এগুলো সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে যায়। এগুলো তাৎক্ষণিক মস্তিষ্কের উত্তেজনা ছাড়া কিছুই না।’

মোশাররফ করিমের মন্তব্যটি মনে ধরেছে নেটিজেনদের। ফলে অনেকেই তাকে সাধুবাদ জানিয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে পোস্ট দিচ্ছেন।

বলা প্রয়োজন, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে মোশাররফ করিম ও চঞ্চল চৌধুরী দুজনেই পশ্চিমবঙ্গে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। ইতোপূর্বে মোশাররফকে টলিউডের ‘ডিকশনারি’ ছবিতে দেখা গেছে। আগামীতে আসছেন ‘হুব্বা’ (এক গ্যাংস্টারের জীবন অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা) হয়ে। অন্যদিকে চঞ্চল অপেক্ষায় আছেন তার অভিনীত ‘পদাতিক’ সিনেমার মুক্তির জন্য। যেখানে তিনি কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের ভূমিকায় কাজ করেছেন। টলিউডের সিনেমায় মোশাররফ করিম