‘‌অন্য কোনও দেশে জন্মালে মহাদেশের নেত্রী হতেন’‌, সুকি–মমতাকে একাসনে বসালেন মদন

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় লড়াই–সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছেন। আর এই কথা স্মরণ করে আবেগতাড়িত হলেন মদন মিত্র। এই দেশে এবং বাংলায় জন্মানো তৃণমূল সুপ্রিমোর দুর্ভাগ্য বলেও মন্তব্য করলেন কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র। মদনের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সংগ্রাম করে উঠে এসেছেন বিশ্বের আর কোথাও তার নজির নেই। এই মানুষটিই যদি অন্য কোনও দেশে জন্মাত তাহলে অনেক বড় জায়গায় পৌঁছে যেতেন। এসব বলতে গিয়েই মদন মায়ানমারের সংগ্রামী নেত্রী, নেবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী আং সান সুকির প্রসঙ্গ টানেন।

এখন বাংলায় ইডি–সিবিআই দাপট দেখাচ্ছে। নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীদের গ্রেফতার করছে। সেখানে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। তাই অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল কংগ্রেসের। এই আবহেই আবার দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি না থাকা নিয়ে দু’‌ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেতা–নেত্রীরা। সেটা প্রকাশ্যে বলেছেন অনেকে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয় কুণাল ঘোষকে। এমনকী সৌগত রায়কে আক্রমণ করে বসেছেন মদন মিত্র। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি।

এদিকে মমতা না অভিষেক কার হাতে দল?‌ এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমন আবহে মদন মিত্র সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন। মদন মিত্র বলেন, ‘‌তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সব। তাঁর কথাই শেষ কথা। আমরা শুধু ওঁর কথা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিই। ছোট্ট কুঁড়েঘর থেকে এত বড় বড় দল, হাজার হাজার কোটি টাকার দলগুলিকে হারিয়ে জিতে এসেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্ভাগ্য় যে ভারতের বাংলায় জন্মেছেন। অন্য কোনও দেশে জন্মালে মহাদেশের নেত্রী হয়ে যেতেন। সুকির মতো অনেক বড় জায়গায় চলে যেতেন।’‌ মদনের এমন মন্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ জ্যোতির্বিদ্যার জাদুঘর আজ থেকে উন্মুক্ত সাধারণ মানুষের জন্য, দেখা যাবে প্রদর্শনী

অন্যদিকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি মদন অভিষেক বিরোধী?‌ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি না থাকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের তরজা প্রকাশ্য়ে চলে এসেছে। কুণাল ঘোষ, সৌগত রায়, মদন মিত্র, একের পর এক নেতারা প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। বাগযুদ্ধও বেড়েছে। আবার এদিন সৌগত রায়কে তীব্র আক্রমণ করেন মদন। অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ—এমন মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে মদনকে সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে। সৌগত রায়ের রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে বলে মত মদন মিত্রের। তাই মমতা এবং অভিষেকের মধ্যে তফাত দেখানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি তাঁর। সেক্ষেত্রে মদন অভিষেক–বিরোধী নন সেটা বুঝিয়ে দিলেন। মদনের বক্তব্য, ‘‌অভিষেকের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে তোলার নেপথ্যে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। অভিষেককে সঙ্গে নিয়েই কাজ করতে বলেছেন। কোথাও বাদ দিতে বলেননি। তাই তাঁদের মধ্যে তফাত করা উচিত নয়।’‌