গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুদের কথা শুনতেই হবে, মনে করালেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়

ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুদের গুরুত্ব উল্লেখ করতে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অবশ্যই সরকারকে সংখ্যালঘুদের পাশে থাকতে হবে। তাঁর মতে, সংখ্যালঘুরা জনসংখ্যা বা সামাজিক দিক থেকে সংখ্যায় কম হতে পারে তবে একটি গণতন্ত্রে সমস্ত নাগরিকের স্বাধীন বোধ করা উচিত। সেখানে সংখ্যালঘুদের মতামত প্রকাশের অধিকার থাকবে। শনিবার একটি অনুষ্ঠানের যোগ দিন এ কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: ‘ট্রোল আর্মির আবির্ভাবের সঙ্গে…’ ইন্টারনেটে গুজব ছড়ানো নিয়ে সতর্কবার্তা CJI এর

এদিন ‘গণতন্ত্র, বিতর্ক এবং ভিন্নমত’ শীর্ষক বিচারপতি কেশব চন্দ্র ধুলিয়ার স্মারক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একটি গণতন্ত্রে সকল নাগরিকের স্বাধীন বোধ করার জন্য সরকারকে অবশ্যই সংখ্যালঘুদের পাশে থাকতে হবে। প্রাথমিকভাবে এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারে গণতান্ত্রিক নীতির সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বলে মনে হতে পারে। তবে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হল নৈতিক মর্যাদার অনুভূতি, যাতে সমস্ত নাগরিক একটি দেশে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে একমত হতে পারে। গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্য পথ থাকবে কিন্তু সংখ্যালঘুদেরও বক্তব্য থাকতে হবে।’এর পাশাপাশি আলোচনা এবং ভিন্নমত কীভাবে গণতন্ত্রের ভীততে শক্তিশালী করে? তা নিয়েও বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি। 

প্রধান বিচারপতি ভিন্নমতের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘যদিও গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগরিষ্ঠের দৃষ্টিভঙ্গি প্রাধান্য পায়, তবে এটি বোঝায় যে ভিন্নমত পোষণকারীরা সংখ্যালঘু। তবে সংখ্যালঘুদের সেই ভিন্নমত চিন্তাভাবনা না করা সংখ্যাগরিষ্ঠের চেয়েও বেশি শক্তিশালী হতে পারে।’ প্রধান বিচারপতির মতে, দাস এবং পরাধীন জনসংখ্যা একটি দুর্বল গণতন্ত্রের পথ নিশ্চিত করে। সরকারের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতির আরও বক্তব্য, শুধুমাত্র একটি সংস্থা নির্বাচিত হওয়ার কারণে এটি নিশ্চিত করে না যে সেই সরকার সকলের স্বার্থে কাজ করছে। 

তিনি জানান, ভিন্নমত অর্থাৎ যেগুলি অগ্রহণযোগ্য সেগুলি গণতন্ত্র রক্ষার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, ‘দাসপ্রথার বিলুপ্তি, জাতপাতের বিলুপ্তি, লিঙ্গ বৈষম্য, সংখ্যালঘুদের মুক্তি এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি সবই একসময় ভিন্নমত ছিল। কিন্তু, পরে সেগুলিই স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা আমাদের সমাজকে মৌলিকভাবে পুনর্গঠন করার ক্ষমতা রাখে।’ প্রধান বিচারপতির মতে, যে সমাজ তার নাগরিকদের সমালোচনামূলক চিন্তা করতে উৎসাহিত করে না সেই সমাজ ব্যর্থ হবে। কারণ এটি ভিন্নমত তৈরি করতে পারবে না।