প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনে তৎপর ফিরহাদ হাকিম, কলকাতা পুরসভার গাড়ি চলবে সিএনজিতে

বায়ুদূষণ দেশের একটি বড় সমস্যা। সেটা বাংলাতেও ভালরকম আছে। এই আবহে এবার প্রাকৃতিক গ‌্যাসের উৎপাদন বাড়াতে তৎপর হলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর তাই ধাপার বায়ো–সিএনজি প্ল‌্যান্ট সম্প্রসারণ করার ঘোষণা করলেন মেয়র। শুধু তাই নয়, কলকাতা পুরসভার সমস্ত গাড়ি এই বর্জ‌্য থেকে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক গ‌্যাস বা বায়ো সিএনজিতে চালানো হোক এমনই ইচ্ছা ফিরহাদ হাকিমের। আর এটা করতে পারলে একদিকে দূষণ অনেকটা কমবে। অপরদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে। এই কাজ করার জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ২০টি বায়ো–সিএনজি চালিত ওয়াটার স্প্রিংকলার কেনে কলকাতা পুরসভা। এমন দু’টি গাড়ি চললেও বাকিগুলি গ্যাসের অভাবে থমকে আছে।

এদিকে শীত পড়েছে বঙ্গে। ভালভাবে না পড়লেও শহরের মানুষজন শীতের আমেজ টের পাচ্ছেন। আর শীতকালে বাতাসে দূষণ বাড়ে। তাই বায়ুদূষণ কমাতে ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু নির্দেশ পালন হচ্ছে কিনা খোঁজ নিতে গেলে কঠিন বর্জ‌্য ব‌্যবস্থাপনা বিভাগের অফিসার মেয়রকে জানান, এখন কলকাতা পুরসভার প্রয়োজন দৈনিক ৫০০ কিলোগ্রাম বায়ো সিএনজি। সেটা পাওয়া যাচ্ছে না বলেই বেশ কয়েকটি গাড়ি বসে রয়েছে। ২০২২ সালে ধাপায় যে বায়ো সিএনজি প্ল‌্যান্টের উদ্বোধন করা হয়েছিল সেখানে দৈনিক ১৬০ কিলোগ্রাম গ‌্যাস তৈরি হচ্ছে। তাতে সম্পূর্ণ চাহিদা মিটছে না।

অন্যদিকে এই কথা জানতে পেরে মেয়র নিজে উদ্যোগী হন। আর এই বিষয়ে মেয়র জানান, বায়ো গ্যাস বা প্রাকৃতিক গ্যাস তৈরির ক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর তা বৃদ্ধি করে কলকাতা পুরসভার সমস্ত গাড়ি বায়ো–সিএনজিতে রূপান্তরিত করা হবে। এই বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘চিন্তা ভাবনা করে ফেলা রাখা নয়। দ্রুততার সঙ্গে এখনই কাজটা করতে হবে। এই প্রাকৃতিক গ্যাস তৈরি সম্প্রসারণের জন্য কবে জমি পাবেন তার জন‌্য বসে থাকলে হবে না। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সমস্ত কাজ করতে হবে। ধাপায় অনেকটা জায়গা খালি পড়ে আছে। অবিলম্বে সেখানে বায়ো সিএনজি প্ল‌্যান্ট সম্প্রসারণ করুন।’ এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌যাঁরা তৈলমর্দন করবে তাঁদের পছন্দমত স্কুলে পোস্টিং দেবেন?’ ‌সংসদকে তুলোধনা করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, পচনশীল বর্জ্য দিয়ে দৈনিক পাঁচ টন বায়ো সিএনজি গ্যাস উৎপাদন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এবার ৫০০ টন ‌প্রাকৃতিক গ‌্যাস উৎপাদন হলেই সেটা দিয়ে নিজস্ব গাড়ি চালাবে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু পচনশীল বর্জ্যের অভাবে গ্যাস উৎপাদনের লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়নি। ভাল মানের বর্জ‌্য পেতে এবার পাঁচতারা হোটেলগুলিকে চিঠি দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। এখন শহরে সিএনজি গ্যাসের দাম প্রতি কেজি প্রায় ৭৯ টাকা। সেখানে ২০টি গাড়ি চালাতে গেলে দিনে ১৫০০ কেজি গ্যাস দরকার। যার খরচ মাসে প্রায় ১৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা। কোষাগারে চাপ আছে বলে এই খরচ করতে নারাজ পুরসভা।