ন্যায়সংহিতা বিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ বিধানসভায়, ভোটাভুটিতে হারল বিজেপি

কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যায়সংহিতা বিলের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আনা প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এই বিল পাশের জন্য বিধানসভায় ভোটাভুটি হয়। কিন্তু সেখানে বিজেপি হেরে যায়। ভারতীয় ন্যায়সংহিতা বিল, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা বিল এবং ভারতীয় সাক্ষ্য বিলকে ‘‌কঠোর’‌ এবং ‘‌জনবিরোধী’‌ বলে তকমা দিয়েছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই বিল আনার ক্ষেত্রে যেন তাড়াহুড়ো করা না হয় বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিধানসভায় এই বিলের বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়েছে। সুতরাং বাকি রাজ্যগুলিও তা অনুসরণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ২৯৪টি আসন। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই ভোটাভুটিতে এঁটে উঠতে পারেনি বিজেপি। স্বচ্ছন্দ্যে পাশ হয়ে যায় ন্যায়সংহিতা বিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব। এই বিল পাশ হতেই বাংলার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌এই বিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা হয়েছিল আলোচনার জন্য। তবে এটা পাশ হয়ে যায় বেশিরভাগ বিধায়ক বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায়।’‌ বিজেপির অভিযোগ, পাঁচজন মন্ত্রী দেরিতে ঢুকেছেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যারা দেরি করে এসেছিল, তাঁরা কেউ ভোট দেননি। জানা গিয়েছে, এই বিল দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় যুক্ত হবে।

এদিকে ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি প্রক্রিয়া এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনে নানা বিষয় যুক্ত হবে বলে খবর। যদিও এই তিনটি বিলই জনস্বার্থ বিরোধী বলে মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস। এবারের শীতকালীন অধিবেশনে এই বিল পাশ করাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার বলে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর। এবার বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা করে ন্যায়ের বদলে অন্যায় হতে পারে বলে আলোচনা করল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির বক্তব্য, জাতীয় স্বার্থেই কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল আনছে। ভোটাভুটির সময় দরজা বন্ধ করে তা করা হয়।

আরও পড়ুন:‌ পার্ক সার্কাসের বাড়িতে আছেন সমীর–জাভেরিয়া, পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে আত্মহারা শাশুড়ি

অন্যদিকে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যাঁরা পরে ঢুকছেন, তাঁরা স্লিপ পায়নি। এরপর চোর ধরো, জেল ভরো স্লোগান দিয়ে ভোটাভুটি চেয়েও বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়করা। তার জেরে উত্তাল হয় বিধানসভা। এই বিষয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌মনোজ টিগ্গা, আপনাদের সদস্যদের ভিতরে আসতে বলুন। যাঁরা দেরি করে এসেছেন, তাঁদের স্লিপ দেওয়া হয়নি। সদস্যদের ভিতরে আসতে বলুন। হাউজের সদস্যদের বলছি, আপনারা কেন ভোটাভুটির বেল বাজার সময় এলেন না? হাউজে থাকা সত্ত্বেও কেন এমন ঘটবে?’‌ এরপর অবশ্য প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‌এই বিলগুলির সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার সম্পর্ক রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল নয়।’‌