বারুইপুরের পেয়ারা বিলি করলেন অধ্যক্ষ বিমান, পেয়ার করলেন না বিজেপি বিধায়করা

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন উত্তাপের মধ্যে দিয়েই চলছে। শাসক এবং বিরোধীপক্ষ একে অপরকে দিয়েছে ‘চোর’ স্লোগান। দু’পক্ষের হই–হট্টগোলে তপ্ত আজও বিধানসভার অধিবেশন। আজ, বৃহস্পতিবার নানা অছিলায় ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভায় আজ সব বিধায়কদের জন্য পেয়ারা নিয়ে এসেছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিধানসভা এলাকা বারুইপুর থেকে ২৯৪ জন বিধায়কের জন্য পেয়ারা নিয়ে আসেন স্পিকার। কিন্তু তার পরও বিরোধীদের ‘‌পেয়ার’‌ মিলল না। পেয়ারাও ‘বয়কট’ করল বিজেপি। ফলের উপর রাগ দেখিয়ে বেরিয়ে গেল বিজেপি পরিষদীয় দল।

এদিকে বিধানসভায় স্পিকারের দেওয়া পেয়ারা ফিরিয়ে দিতেই রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রশ্ন উঠে গেল রাজ্য–রাজনীতিতে। বাংলায় শাসক–বিরোধী আগেও ছিল। বিরোধিতা থাকলেও রাজনৈতিক সৌজন্য দেখা যেত। আজ বিজেপি তা কার্যত শেষ করে দিল বলে মনে করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা। বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য, শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগ করা হচ্ছে। তাই পেয়ারা নেবেন না। তবে বারুইপুরের পেয়ারার খ্যাতি সারা দেশে রয়েছে। ভন রাজ্যেও পাওয়া যায় ‘‌বারুইপুরের পেয়ারা’‌। সেই পেয়ারাকেই আজ অনাদর করা হল।

অন্যদিকে আজও বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপির মধ্যে তুমুল চিৎকার চলে। তখনই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সব বিধায়কের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সবাই পেয়ারা নিয়ে যাবেন।’ যদিও সেই কথায় কর্ণপাত না করে বিজেপি বিধায়করা ওয়াক আউট করেন। বিধানসভার অধিবেশন থেকে বিজেপি ওয়াক আউট করার পর স্পিকার বিধানসভায় নিজের ঘরে ডেকেছিলেন বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গাকে। বিজেপি বিধায়কদের জন্য পেয়ারা নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু মনোজ টিগ্গা কারণ দেখিয়ে পেয়ারা প্রত্যাখ্যান করেন।

আরও পড়ুন:‌ শ্রমিকদের পোশাক পরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, মকাইবাড়িতে চা–পাতা তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

তারপর আজ শীতকালীন অধিবেশনের শেষদিন ছিল। এদিন ছোট ছোট পলিথিন প্যাকেটে পেয়ারা দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের অনেকেই প্যাকেট খুলে বিধানসভার মধ্যেই পেয়ারা খেতে শুরু করেন। কিন্তু বিজেপির চিফ হুইপ মনোজ টিগ্গা পেয়ারা ফিরিয়ে দেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করার জেরেই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্যরা। তিক্ততার আবহেই বারুইপুরের পেয়ারা বিতরণ ছিল সৌজন্যে বার্তা। যাতে সাড়া না দিয়ে বিজেপি শিবির অসৌজন্যতা দেখাল।