শীতের দেখা নেই, অকাল বৃষ্টিতে আলু ও ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা চাষিদের

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেও এখনও সেভাবে শীতের দেখা নেই। সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কখনও পশিমা ঝঞ্ঝা আবার কখনও নিম্নচাপ। তার জেরে মঙ্গলবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আর তাতেই দুশ্চিন্তায় চাষিরা। আলু চাষ থেকে শুরু করে ধান তোলা কীভাবে হবে তাই নিয়ে মাথায় হাত চাষিদের। সাধারণত হুগলির বিস্তৃত অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে আলু চাষ করা হয়ে থাকে। তবে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে সেখানে আলু চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত আরও হলে সেক্ষেত্রে বেশ কয়েকদিন আলু চাষ পিছিয়ে যাবে। আর তার ফলে ফলন কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাছাড়া আলুর বীজ পচে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন।

আরও পড়ুন: পর্যাপ্ত সার মিলল না কেন?‌ এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া চিঠি পাঠাল নবান্ন

সাধারণত শীত পড়তেই আলু চাষ করা হয়ে থাকে। হুগলির তারকেশ্বর, আরামবাগ, ধনেখালি এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আলু চাষ করা হয়। একেই শীতের দেখা নেই তার ওপর দোসর বৃষ্টি। আলু চাষিদের মতে, চলতি বছরে যে আবহাওয়া তার ফলে আলু চাষ ১০ থেকে ১৫ দিনের মতো পিছিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আরও বৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে আরও ৫-৬ দিন পিছিয়ে যাবে আলু চাষ। আর দেরি করে চাষ হওয়ার ফলে ফলন ভালো হবে না। এছাড়াও অনেক জমিতে আলু চাষের জন্য সার দেওয়া হয়েছে। তবে অনেক জমিতে আলুর বীজ লাগানোর আগেই বৃষ্টি চলে আসে। এই অবস্থায় ফের নতুন করে সার ছড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। তার ফলে খরচও বাড়বে। এছাড়া আলু চাষের জন্য যে সমস্ত চাষিরা বীজ তৈরি করে ফেলেছেন তাতে পচন ধরবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তবে ইতিমধ্যে যে সমস্ত জমিতে আলু বপন করা হয়েছে অল্প বিরতিতে তাতে বিশেষ সমস্যা হবে না বলে মত চাষিদের।

সূত্রের খবর হুগলিতে এখনও পর্যন্ত ৩০ শতাংশ জমিতে আলু লাগানো হয়েছে। তবে অধিকাংশ জমিতেই আলু লাগানোর কাজ বাকি রয়েছে। এই অবস্থা নতুন করে বৃষ্টি হলে সেই আলুও পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। প্রসঙ্গত, আগেই আলুর বীজের কালোবাজারির ছবি সামনে এসেছে। যে ক্ষেত্রে আলুর বীজ বস্তা প্রতি ২২০০ টাকা আবার চন্দ্রমুখী আলুর বীজ বস্তা প্রতি ৩২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বর্তমানে সেই দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে। চন্দ্রমুখী আলুর দাম এখন ১৮০০ টাকা বস্তা এবং জ্যোতি আলুর দাম ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, বীরভূমের ধানচাষিরাও সমস্যায় পড়েছেন। জেলার পাড়ুই, খয়রাশোল, ময়ূরেশ্বর, লাভপুর, মহম্মদবাজার এলাকার চাষিরা জমিতে থাকা ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আবার যে সমস্ত জমিতে কাটা ধান মজুত করা আছে বা জমিতে কাটা অবস্থায় আঁটি করার জন্য বিছানো আছে, সেক্ষেত্রেও ধানের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে জমিতে জল জমলে সমস্যা হবে বলেই মনে করছেন চাষিরা।