মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে একদিনে ১০ শিশুর মৃত্যু, অপুষ্টিকেই দায়ী হাসপাতালের

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এসএনসিইউ ওয়ার্ডে একদিনে ৯ নবজাতকের মৃত্যুকে ঘিরে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় সদ্যোজাতদের পরিবারে যেমন শোকের ছায়া নেমেছে, তেমনিই আবারও রাজ্যে বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ছবি ধরা পড়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শিশুদের কম ওজন এবং অপুষ্টজনিত কারণেই তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এছাড়াও মৃত্যু হয়েছে দুই বছরের এক শিশুর। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে মিলল না চিকিৎসক ও নার্স, একা প্রসব করে নবজাতককে হারালেন তরুণী

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালের এসএনসিইউ ওয়ার্ডে ৫৪ টি শিশু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, মাস খানেক ধরে মেডিক্যাল কলেজের উপর চাপ বাড়ছে। সেখানে বর্তমানে ১০০-র উপর শিশু ভর্তি রয়েছে। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যে এসএনসিইউ ওয়ার্ড রয়েছে সেটির সংস্কারের কাজ চলছে গত এক মাস ধরে। ফলে ওই এলাকার অসুস্থ নবজাতকদের রেফার করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। এছাড়া মুর্শিদাবাদের অন্যান্য এলাকায় ব্যাঙের মতো গজিয়ে উঠেছে নার্সিংহোম। সেখানে নবজাতকের জন্ম হওয়ার পর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। যার ফলে এই হাসপাতালের উপর চাপ বাড়ছে। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই নবজাতকদের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই সময় গোল্ডেন আওয়ার পেরিয়ে যাচ্ছে। তখন আর শিশুদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।

যদিও যে ৯ জন নবজাতক মারা গিয়েছে তাদের প্রসঙ্গে হাসপাতালের অধ্যক্ষ অমিত দাঁ জানান ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মৃত নবজাতকদের কারও ওজন কম ছিল আবার কেউ অপুষ্টিজনিত কারণে ভুগছিল। কোনও কোনও শিশুর ওজন ছিল ৪৫০ থেকে ৬৫০ গ্রাম ছিল। এই সমস্ত কারণে শিশুদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুদের কেন এরকম এই সমস্যা হচ্ছে? সে প্রসঙ্গেও জানান অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, এর পিছনে সামাজিক কারণ রয়েছে। অনেকেই অল্প বয়সে বিয়ে করছেন। আবার অনেকে ঘন ঘন সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। যার ফলে মায়েরা অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছেন এবং শিশুদের ক্ষেত্রেও সেই সমস্যা হচ্ছে।  এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ভোলানাথ আইচ জানান, এসএনসিইউ ওয়ার্ডে এক একটা বেডে ৩ জন করে শিশুকে রাখা হচ্ছে। একমাত্র মুর্শিদাবাদ কলেজেই আধুনিক ভেন্টিলেশনে রয়েছে। সেই কারণে শিশুদের এখানে রেফার করা হচ্ছে।